দক্ষিণ ভারতের আরেকটি রাজ্যে এবার আমূলের সম্প্রসারণ নিয়ে বিতর্ক
নিউজ ডিস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: দক্ষিণ ভারতের আরেকটি রাজ্যে এবার আমূলের সম্প্রসারণ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অন্ধ্র প্রদেশের চিত্তুরে প্রস্তাবিত আমূল নতুন ইউনিটটি রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের সমালোচনার মুখে পড়েছে।
অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগন মোহন রেড্ডি গত মঙ্গলবার আমূলের নতুন ইউনিটটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। তিনি বলেন, এটির লক্ষ্য ছিল সেই স্থানে অবস্থিত বিজয় ডেয়ারিকে পুনরুজ্জীবিত করা, যা ২০০২ সাল নাগাদ বন্ধ হয়েছিল।
যদিও রাজ্যের বিরোধী দল টিডিপি অভিযোগ অভিযোগ তুলেছে, আসলে এই প্রকল্পটি গুজরাটের একটি সংস্থাকে ‘বিক্রয়’ প্রকল্প এবং যা তেলেগু ভাবাবেগে বড় আঘাত। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী জগন মোহন রেড্ডি অভিযোগ, টিডিপি নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এন. চন্দ্রবাবু নাইডু নিজের পারিবারিক ডেয়ারির প্রচারের জন্য বিজয় ডেয়ারি একসময় কৌশলে বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
বর্তমান ওয়াইএসআরসিপি সরকার আমূলের সঙ্গে চুক্তি করে ৯৯ বছরের জন্য চিত্তুরের জমি লিজ দিয়েছে। এখানে আমূল আইসক্রিম, দুধের গুঁড়া, পনির, দই, মাখন-সহ বিভিন্ন দুগ্ধজাত পণ্য তৈরি করবে এবং প্রতিদিন প্রায় ১ লক্ষ লিটার দুধ প্রক্রিয়াকরণ করবে বলে সংবাদসংস্থা জানিয়েছে।
রেড্ডি বলেছেন, আমূল এই ইউনিটটি স্থাপনের জন্য ৩৮৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। এর ফলে প্রায় ৫,০০০ প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে এবং সংস্থার আউটলেট এবং বিতরণ চ্যানেলের মাধ্যমে প্রায় ২ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলেছে, “আমরা সমবায় খাতকে পুরনো পথে ফিরিয়ে আনার জন্য আমূলকে নিয়ে এসেছি…। দুধের দাম বৃদ্ধির ফলে শুধু চিত্তুর অঞ্চলেই নয়, পার্শ্ববর্তী রায়ালসীমা এবং নেলোর জেলার হাজার হাজার কৃষক উপকৃত হবেন”।
অন্যদিকে, টিডিপি অভিযোগ করেছে যে জগন মোহন রেড্ডি “চাপের” কাছে নতি স্বীকার করে এবং সেন্ট্রাল এজেন্সিগুলির কাছ থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য আমূলকে রাজ্যে সুবিধা করে দিচ্ছে। রাজ্যের হাজার কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি এবং সমবায় ডেইরিগুলি আমূলের কাছে সমর্পণ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য সম্প্রতি দক্ষিণ ভারতে অন্য দুই রাজ্য কর্নাটক এবং তামিলনাড়ুতেও আমূলকে নিয়ে বিতর্ক চরমে উঠেছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহের রাজ্যের বিজেপি নিয়ন্ত্রিত আমূল সমবায় গোষ্ঠী তামিলনাড়ুর বিভিন্ন এলাকায় দুধ সংগ্রহ শুরু করার পরে স্থানীয় দুধ উৎপাদক, দুগ্ধজাত সামগ্রী নির্মাতা এবং সমবায় সংস্থাগুলি অসুবিধার মুখে পড়েছেন বলেও অভিযোগ করেছিলেন ডিএমকে প্রধান তথা তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। সেই সময় তিনি বলেছিলেন, ‘‘এলাকাভিত্তিক দুগ্ধ সংগ্রহের নীতি লঙ্ঘন করে আমূল অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতার আবহ তৈরি করেছে।’’
কর্নাটকে বিধানসভা ভোটের আগে আমূলের একটি বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল— ‘শীঘ্রই বেঙ্গালুরুতে আসছি।’ এক পরেই শুরু হয় বিতর্ক। কংগ্রেস এবং জেডিএস অভিযোগ তোলে কর্নাটকের সরকারি দুগ্ধ সংস্থা ‘কর্নাটক মিল্ক ফেডারেশন’ (কেএমএফ)-এর ব্র্যান্ড ‘নন্দিনী’কে কোণঠাসা করে মোদী-শাহের রাজ্যের আমূলকে ব্যবসার সুযোগ করে দেওয়ার ছক কষেছে বিজেপি।