মণিপুরের হিংসার প্রভাব: খাদ্য সংকটে পড়তে পারে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: প্রায় দু’মাস বন্ধ থাকার পর বুধবার আবার খুলল মণিপুরের সব স্কুল। প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস শুরু হল। গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে ৩ মে থেকে উত্তপ্ত ছিল মণিপুর। বন্ধ রাখা হয়েছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি।
তবে পরিস্থিতি মোটেই স্বাভাবিক হয়নি। রয়েছে তীব্র আতঙ্ক, আশঙ্কা। মণিপুরে লাগাতার হিংসার ব্যাপক প্রভাব পড়ছে চাষবাসের ওপরে। বহু কৃষকই ফসল তুলতে পারছেন না ক্রমবর্ধমান হিংসার জেরে। যদি অবিলম্বে পরিস্থিতি পরিবর্তন না হয় তাহলে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্য গুলির মধ্যে খাদ্যের সংকট দেখা দেবে।
রাজ্যের কৃষি দপ্তরের আধিকারিক এন গজেন্দ্র সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, মণিপুরের কৃষকরা এই হিংসার জেরে প্রায় ৫,১২৭ হেক্টর জমিতে ফসলই উৎপাদন করতে পারেননি। জার ফলে ২৮ জুন পর্যন্ত উৎপাদনে ঘটাতি রয়েছে প্রায় ১৫,৪৩৭.২৩ মেট্রিক টন। তিনি আরও জানান যদি এই বর্ষাতে কৃষকরা ধান চাষ করতে না পারেন তা হলে জুলাইয়ের শেষে ঘাটতির পরিমান আরও বাড়বে। রাজ্য সরকারের পক্ষে বীজ ও সারর ব্যবস্থাও করা হবে যাতে কৃষকরা অল্প সময়ের মধ্যে ফসল উৎপাদন করতে পারে বলে জানান তিনি।
পরিসংখ্যান অণুযায়ী মণিপুরে প্রায় ২ থেকে ৩ লক্ষ কৃষক ১.৯৫ লক্ষ হেক্টর জমিতে ধান চাষ করে থাকেন। থউবাল জেলায় হেক্টর প্রতি সর্বাধিক ফসল চাষ হয় প্রতিবছর। এবার সেখান থেকেও উঠে আসছে নেতিবাচক পরিস্থিতি। অন্যান্য ফসলের সঙ্গে আদাও চাষ হয় মণিপুরে। সেই আদা উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্য গুলোর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেও আসে। কিন্তু মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতির ফলে আদা জমি থেকে তুলছেন না চাষিরা। ফলে রপ্তানিতেও টান, সেই কারণেই আদার দাম বেড়েছে আকাশ ছোঁয়া। কলকাতার বাজারে আদা ছুঁয়েছে সারে তিনশো টাকা কেজি। রাজ্য সরকারের আরও আশঙ্কা চলতি মাসের শেষের দিকে যদি ‘মেইতেই ধানের’ চাষ না হয় তাহলে আগামী বছরে ব্যাপক হারে দাম বাড়বে মেইতেই চালের।
বহু চাষিই ফসল তুলতে যাচ্ছেন না চাষের জমিতে। তাদের আশঙ্কা চাষের ক্ষেতে গেলেই হয়তো সন্ত্রাসবাদীরা গুলি চালিয়ে হত্যা করতে পারে তাদের। আবার অনেক চাষি খালি জমি ফেলে রেখেছে চাষ করছেন না নিজেদের প্রাণের ভয়ে। নিরাপত্তা রক্ষী ও পুলিশের ওপর ভরষা করতে পারছে না মণিপুরের সাধারণ মানুষ থেকে চাষিরা।