১০০ বছরের উষ্ণতম মাস জুলাই! দাবি নাসার
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: এর আগে এতটা তেতেপুড়ে ওঠেনি ধরিত্রী। জুলাই মাসটাও এতটা গরম হয়ে ওঠেনি এর আগে কোনও দিন। গত ১০০ বছরের তথ্যাদির ভিত্তিতে এমন দাবি করেছে নাসা।
গত কয়েকদিনে তাপমাত্রার একাধিক রেকর্ড ভেঙেছে ইউরোপের দেশগুলি। প্রবল গরম পড়েছে আমেরিকা ও চীনেও। সবমিলিয়ে নাসার বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, এক শতাব্দীর উষ্ণতম মাস হতে চলেছে চলতি জুলাই। শতাব্দীর পরিবর্তে হাজার বছরেরও রেকর্ড গড়তে পারে ২০২৩ সালের জুলাই মাস।
১৯৫১ থেকে ’৮০, পৃথিবীর তিন দশকের তাপমাত্রাকে ‘বেসলাইন’ ধরে নাসা দেখেছে, জুলাইতে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা যা থাকা উচিত, সে তুলনায় এ বছরের জুলাই অনেক বেশি উষ্ণ। নাসার পরিবেশবিজ্ঞানী গেভিন স্কমিড বলেছেন, প্রশান্ত মহাসাগরে উষ্ণ জলস্রোত এল নিনোর কারণে এ বছরে তাপমাত্রা বেড়েছে সমুদ্রপৃষ্ঠের। ফলে তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। ক্যালিফর্নিয়া এবং টেক্সাসে তাপপ্রবাহ চলছে। আগামী দিনে তাপমাত্রা আরও বাড়বে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ক্যালিফর্নিয়ার ডেথ ভ্যালিতে তাপমাত্রা ৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, নানা জায়গায় প্রচণ্ড দাবানল ছারখার করে দিচ্ছে সব। কানাডার কিছু জায়গাতেও দাবানল দেখা গেছে।
গত ৭-৮ বছর ধরে ইউরোপে খরা লাগাতার ভাবে যতটা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠেছে, তা গত ২ হাজার বছরে একটি রেকর্ড। গোটা ইউরোপ মহাদেশে বেড়েছে তাপপ্রবাহের ঘটনা। বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্যই এটা হয়েছে। চলতি এপ্রিল থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে তাপমাত্রা রেকর্ড ছুঁয়েছে। চীনের চেংড়ু, ঝিজিয়াং, নানজিং ও ইয়াংঝি নদীর ব–দ্বীপ অঞ্চলে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে।
নাসার আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ গ্যাভিন শিমিডট বলেন, “বিশ্বজুড়েই জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। আমেরিকা, ইউরোপ, চিন-সব দেশেই একই সময়ে তাপপ্রবাহ চলছে। এতদিনের যাবতীয় রেকর্ড ভেঙে প্রবল গরমে ভুগছে দেশগুলি। তবে গরম বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসাবে শুধু এল নিনোকে দায়ী করলে চলবে না। আচমকাই এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বিশ্বজুড়ে।”
শুধু মাস নয়, বছরের নিরিখেও উষ্ণতম হিসাবে রেকর্ড গড়তে পারে ২০২৩ সাল, এমনটাই অনুমান নাসার বিজ্ঞানীর। ইতিমধ্যেই ইতিহাসের উষ্ণতম দিন হিসাবে নজির গড়েছে জুলাই মাসের ৩ তারিখ। প্রবল গরমের জেরে ভারত-সহ বিশ্বের নানা দেশেই বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে।