রাজবংশীদের জীবনে অবিচ্ছেদ্য অংশ তিস্তা বুড়ি ও মেচেনী মেলা, কেন জানেন?

জলপাইগুড়ির অধিবাসীদের জীবনধারা তিস্তা নদীকে ঘিরে গড়ে উঠেছে।

July 27, 2023 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi
তিস্তা বুড়ি পুজো

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: জলপাইগুড়ির অধিবাসীদের জীবনধারা তিস্তা নদীকে ঘিরে গড়ে উঠেছে। প্রতিবছর মাতৃরূপে পূজিত হয় এই নদী। অনেকে একে কৃষি-পুজোও বলে থাকেন। পুজো উপলক্ষে্য একটি মেলার‌ও আয়োজন করা হয়। নাচ, গান, হুল্লোড় আনন্দে ভরপুর এই মেলাকে স্থানীয় ভাষায় বলা হয় মেচেনী মেলা। সুস্থ ভাবে বাঁচার লক্ষ্যে ও জীবজগতের মঙ্গলার্থে রাজবংশীরা এই মেলা করে থাকে।

রাজবংশীরা কাছে এই নদী ‘বুড়ি’ নামে পরিচিত। অতিরিক্ত বর্ষায় বন্যা, গ্রীষ্মের মরসুমে জলের জন্য হাহাকার, বিপর্যস্ত হয় চাষবাস। এই সব কিছু থেকে রক্ষা পেতে করা হয় নদী-পুজো। রাজবংশীদের বিশ্বাস, এই পুজো শুধু নদীকে তুষ্ট করা নয়, এই পুজোয় অংশ নিলে মেটে পারিবারিক কলহ‌ও।

তিস্তা নদীর সঙ্গে রাজবংশীদের প্রাণের টান। এই সম্প্রদায় বংশপরম্পরায় মেচেনী মেলার আয়োজন করে আসছে । জলপাইগুড়ি রাজবাড়ির উদ্যোগে প্রতি বছর এই সময় নদী পুজোয় মেতে ওঠে এই সম্প্রদায়ের আবালবৃদ্ধবনিতা। যোগ দেন স্থানীয় মানুষরাও।

মেচেনী মেলা

রাজবংশীরা মনে করে নদীর বন্যা যেমন চাষ ও মানুষের জনজীবনের ক্ষতি করে, তেমন আবার নদী পলি বয়ে এনে নতুন জীবনের সূচনাও করে। এই ভাবনা থেকেই নদী-পুজো বা মেচেনী পুজোর সূচনা। সারাদিন নিরামিষ আহার করে নাচ-গানের মাধ্যমে তিস্তাকে পুজো দেয় এই সম্প্রদায়ের মানুষরা। মূলত ধামসা, বাঁশীই বেশি ব্যবহৃত হয় এদের লোক গান থুড়ি মেচেনী গানে। এখন‌ও নর্থ-ইস্টার্ন ফাউন্ডেশন ফর সোশাল সায়েন্সেস রিসার্চ-এর সদস্যরা এই মেলার খরচ বহন করেন। জানা গিয়েছে জলপাইগুড়ি ছাড়াও মালবাজার, রাজগঞ, ধুপগুড়ি, মেখলিগঞ্জ ইত্যাদি ব্লক থেকে অনেকেই এখানে অংশগ্রহণ করেন।

তিস্তা বুড়ির পুজো দিয়ে জলপাইগুড়ি রাজবাড়িতে শুরু হল মেচেনী মেলা। নদীর এই খাময়কেয়ালিপনার হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রতি বছরই তিস্তা বুড়ির পুজো দিয়ে থাকেন স্থানীয়রা। প্রতি বছরই বর্ষার সময় এই পুজো অনুষ্ঠিত হয়। এই মেলার মধ্য দিয়ে ভবিষ্যতে সুস্থ ভাবে বাঁচার উদ্দেশ্য লোকেরা পারিবারিক বিবাদ মিটিয়ে থাকেন। স্থানীয়মানুষের কাছে এই উৎসব আসলে মিলন উৎসবে পরিণত হয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen