নিছক পরিকল্পনার অভাবে এবারেও যথেচ্ছ প্লাস্টিক ব্যবহার বইমেলায়

বিভিন্ন স্টলের দোকানীদের কথা, ৫০ মাইক্রনের বেশী পুরু প্লাস্টিক ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকল্প সামগ্রী দিয়ে ব্যাগ তৈরি করতে গেলে খরচ বেশি পড়ে।

February 4, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

বছরভর রাজ্য সরকার থেকে শুরু করে পুরসভাগুলি প্লাস্টিক বিরোধী অভিযান ও দূষণ রোধে সচেতনতার প্রচার চালায়। কিন্তু, কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা ও নির্দেশের অভাবে প্রায় সব স্টল থেকে বই বিক্রী করা হচ্ছে প্লাস্টিকের ব্যাগে। ক্রেতারা নিজেরাও নিয়ে আসছেন প্লাস্টিকের প্যাকেট। মেলা প্রাঙ্গণে ব্যবহার হচ্ছে প্লাস্টিকের জলের পাউচ, থার্মোকলের থালা। এছাড়া স্টল সাজাতে ফ্লেক্স, ব্যানারের ব্যবহার তো আছেই। তবে গত বছরের তুলনায় প্লাস্টিকের ব্যবহার অনেকটাই কমেছে। বইমেলায় প্লাস্টিক নিষিদ্ধ ঘোষণাও হয়নি। 

বিভিন্ন স্টলের দোকানীদের কথা, ৫০ মাইক্রনের বেশী পুরু প্লাস্টিক ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকল্প সামগ্রী দিয়ে ব্যাগ তৈরি করতে গেলে খরচ বেশি পড়ে। সেই খরচ বহন করা মুশকিল হচ্ছে। তবে আগামী বছর থেকে অবশ্যই সেই চেষ্টা করা হবে। একই যুক্তি শোনা গেল লিটল ম্যাগাজ়িনের প্যাভিলিয়নেও।

প্লাস্টিকের ব্যবহার শুধু বই কেনাবেচার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বইমেলার স্টল সাজানোর ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণে প্লাস্টিকজাত সামগ্রী যেমন ফ্লেক্স ও ব্যানার ব্যবহার করা হচ্ছে। ফুড কোর্টে কাগজের প্লেটের পাশাপাশি থার্মোকলের থালা, পাত্রও চোখে পড়ছে। বইমেলার বিভিন্ন জায়গায় ‘মে আই হেল্প ইউ’ ডেস্ক থেকে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ সেই প্লাস্টিকের পাউচ থেকে জল খাচ্ছেন। বইমেলার রিং রোডের ধারে রাখা আবর্জনা ফেলার জায়গায় স্তূপীকৃত হয়ে পড়ে রয়েছে সেই ফাঁকা পাউচ-ই।

বইপ্রেমীদের বক্তব্য, ৫০ মাইক্রনের থেকে কম পুরু প্লাস্টিক ব্যবহার করা যাবে না। তা মানা হচ্ছে কি না, সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা মুশকিল। তবে প্লাস্টিকের ব্যাগের সংখ্যা এ বছর বেশ কিছুটা কমেছে। বইপ্রেমীদের দাবী, কর্তৃপক্ষ যে ভাবে মেলা চত্বরে ধূমপান নিষিদ্ধ করেছেন, সে ভাবে প্লাস্টিকও নিষিদ্ধ করুন।

পরিবেশকর্মীরা বলেন, প্রশাসনের তরফে শুধু নিয়ম করলেই হয় না। মানুষের মধ্যে সচেতনতাও প্রয়োজন। সেই পরিবর্তন এক দিনে হবে না। গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর অনেক ইতিবাচক অবস্থা বইমেলার। বহু ছোট স্টলেও কাপড় কিংবা কাগজের ব্যাগে বই দেওয়া হচ্ছে। প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা হচ্ছে।

রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র জানান, সার্বিক ভাবে প্লাস্টিক নিষিদ্ধ নয়। ৫০ মাইক্রনের থেকে কম পুরু প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছে। প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে প্রচার গুরুত্ব পেয়েছে বইমেলায় তাঁদেরই স্টলে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা স্কুলপড়ুয়াদের দিয়ে প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে সচেতনতার প্রচার চালানোর পরিকল্পনা করছি।’’

পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক সুধাংশুশেখর দে অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘এ বছর প্লাস্টিকের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে।’’

——————————————————————————–

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen