IIPS-এর সমীক্ষায় বেহাল মোদীর প্রকল্প, সাসপেন্ড ডিরেক্টর, কী ছিল রিপোর্টে?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মোদী সরকারের ফের বেনজির পদক্ষেপ। সূত্রের খবর, সমীক্ষায় কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির কঙ্কাল সার চেহারা ধরা পড়তেই সাসপেন্ড করা হল সমীক্ষাকারী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর পপুলেশন সায়েন্সেসের (আইআইপিএস) ডিরেক্টর জেমসকে। IIPS-এর ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক হেল্থ অ্যান্ড মর্টালিটি সূত্রে খবর, গত শুক্রবার ২৮ জুলাই সন্ধ্যায় জেমসকে সাসপেনশন লেটার পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে নিয়োগে বেনিয়ম।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অধীন IIPS সরকারের হয়ে ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেল্থ সার্ভের (এনএফএইচএস) মতো গুরুত্বপূর্ণ সমীক্ষার কাজ করে। বেহাল দশা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাধের প্রকল্পগুলির। খোদ কেন্দ্রীয় সরকারি সমীক্ষাতেই উঠে এল সেই ব্যর্থতার ছবি। ফলে প্রবল অস্বস্তিতে মোদী সরকার।
কী ছিল সেই সমীক্ষায়?
NFHS -5 মোদী সরকারের জন্য ‘অস্বস্তিকর’ বেশ কয়েকটি ডেটা সেট তুলে ধরেছিল। তাদের সমীক্ষায় দেখানো হয়েছিল
- দেশের ১৯ শতাংশ পরিবারই শৌচালয় ব্যবহার করে না।
- কেবলমাত্র লাক্ষাদ্বীপে ১০০ শতাংশ মানুষ শৌচালয়ের সুবিধা পায়।
- উজ্জ্বলা যোজনায় প্রচার আর পরিসংখ্যানের ফারাক প্রকাশ্যে এনেছিল NFHS -5
- ৪০ শতাংশ পরিবার পরিচ্ছন্ন জ্বালানির সুবিধা পায় না।
- গ্রামে ৫৭ শতাংশ পরিবারের LPG ও প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারের সুবিধা নেই।
- শিশু, বয়ঃসন্ধিতে থাকা কিশোরী, অন্তঃসত্ত্বাদের পুষ্টি সংক্রান্ত সূচকের উন্নতির জন্য ২০১৮ সালে চালু ‘পোষণ অভিযানে’ও তেমন কোনও ফলাফল পাওয়া যায় নি। বরং অ্যানিমিয়ার সমস্যা বেড়ে গিয়েছে।
- এর জেরেই মোদী সরকার NFHS-6 এ অ্যানিমিয়ার সমীক্ষা বাদ দেওয়ার কথা ভেবেছিল বলে জানা গেছে।
সংবাদমাধ্যমের দাবি, IIPS-এর সমীক্ষার কিছু তথ্য মোদী সরকারের ভাবমূর্তির ক্ষেত্রে ছিলঅসুবিধাজনক। এজন্য সংস্থার ডিরেক্টর জেমসকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি রাজি হননি। এরপরই নেওয়া হয় সাসপেনশনের মতো বেনজির পদক্ষেপ। যদিও রাতে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থেই ৯০ দিনের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে জেমসকে। তদন্ত আগে শেষ হলে সাসপেনশন রিভিউ কমিটির ছাড়পত্রের ভিত্তিতে এই নির্দেশ প্রত্যাহার করা হতে পারে।
বিভিন্ন তথ্য নিয়ে মোদী সরকারের লুকোচুরি নতুন কিছু নয়। এর আগে কনজামশন এক্সপেন্ডিচার সার্ভে রিপোর্ট বাতিল করে দেয়। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে বেকারত্ব সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশও বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেই সময় এই ঘটনার প্রতিবাদে ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্যাল কমিশনের কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান পি সি মোহন পদত্যাগ করেছিলেন।
রাজনৈতিক মহলের মতে, মোদী সরকার চায় ‘ইতিবাচক’ তথ্য। যা ভোট বৈতরণী উতরে দিতে সাহায্য করবে। কিন্তু NFHS -5 এর বিভিন্ন তথ্যে মোদী সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের ফানুস ফুটো হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে উজ্জ্বলা যোজনায় সাফল্যের প্রচারের ঢক্কা নিনাদ শোনা গিয়েছিল মোদী থেকে শুরু করে বিজেপির তাবড় নেতাদের মুখে। কিন্তু বাস্তবে ছিল বম্ভারম্ভে লঘুক্রিয়া। যাইহোক ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে এই রিপোর্ট মোদী সরকারকে প্রবল অস্বস্তিতে ফেলবে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞ মহলের।