‘রাজ্যের দেনার পরিমাণ বাড়ছে’, বিরোধীদের এই দাবি সত্য নয়, তথ্য দিয়ে বললেন মুখ্যমন্ত্রী
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বিরোধীরা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রায়শই অভিযোগ করে থাকে, রাজ্যের দেনার পরিমাণ নাকি বেড়ে ৭ লক্ষ কোটি টাকা হয়ে গিয়েছে। দান, ধ্যান খেলাধুলোর পিছনে খরচ করতে গিয়ে রাজ্যের ভাঁড়ার শূন্য। বুধবার এই অভিযোগের জবাব দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমাণ করলেন, বিরোধীদের অভিযোগ সঠিক নয়।
বুধবার নবান্নে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে পাশে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলন করে দাবি করলেন, রাজ্যের ৭ লক্ষ কোটি ঋণ হয়ে গিয়েছে, এই তথ্য ঠিক নয়। আমাদের বাম আমলের ঋণের বোঝা বইতে হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী, “কোনও রাজ্য পুরনো ঋণ নিয়ে থাকলে, সেই ঋণের সুদ বাড়তে থাকে। যার ফলে পুরনো রাজ্যগুলির ঋণের পরিমাণ এমনিই বেশি হয়। অন্ধ্রপ্রদেশ বা তেলেঙ্গানার মতো নতুন করে তৈরি হওয়া রাজ্যের এই ঋণের পরিমাণ অনেক কম হয়। কারণ এই রাজ্যগুলিকে পুরনো ঋণ বইতে হয় না।”
ঋণের পরিমাণ নিয়ে মুখ্যসচিবের ব্যাখ্যা, কোনও রাজ্য কতটা দেনায় ডুবেছে সেটা ঋণের পরিমাণ দেখে নির্ধারণ করা যায় না। সেটা নির্ধারণ করতে হয় রাজ্যের মোট জিডিপি এবং ঋণের অনুপাতের উপর। মুখ্যসচিব জানান, ২০১১ সালে রাজ্যের ঋণের পরিমাণ ছিল প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকা। কিন্তু সেসময় রাজ্যের ঋণের সঙ্গে জিডিপির অনুপাত ছিল ৪০ শতাংশ। সেখানে বর্তমানে রাজ্যের ঋণের পরিমাণ বেড়ে ৫.৮৬ লক্ষ কোটি টাকা হলেও সে তুলনায় জিডিপির পরিমাণ অনেকটা বেড়েছে। যার ফলে ঋণ এবং জিডিপির অনুপাত কমে হয়েছে ৩৩ শতাংশ। খেলা-মেলার পিছনে খরচ করতে গিয়ে পরিকাঠামো খাতে উন্নয়ন করতে পারছে না সরকার। বিরোধীদের এই অভিযোগও এদিন খণ্ডন করেছেন মুখ্যসচিব। তিনি জানিয়েছেন, ২০১১ সালে যেখানে বাংলায় পরিকাঠামো খাতে বরাদ্দ ছিল মাত্র ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা। সেখানে বর্তমানে পরিকাঠামো খাতে বরাদ্দ প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ১৫ গুণ বেড়েছে।
এর পাশাপাশি এদিন নবান্ন থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, বহু ঘোষিত ভাতা দিতে সমস্যায় পড়েছে রাজ্য, কারণ কেন্দ্রের থেকে প্রাপ্য টাকা মিলছে না। মিলছে না ১০০ দিনের কাজের টাকা। তবু জব কার্ড হোল্ডারদের কিছু টাকা দেওয়া হয়েছে। এবারেও ১১ হাজারেরও বেশি রাস্তা রাজ্য সরকার নিজের টাকায় তৈরি করেছে।
তিনি এদিন নিজেদের কাজের তালিকা ঘোষণা করে জানান, সরকারি কাজের পারফরম্যান্সে বাংলাই সেরা। এ বিষয়ে একাধিক কেন্দ্রীয় টিম বাংলায় এসে ঘুরে দেখে গেছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘পারফরম্যান্স ভাল হলে তো পুরস্কার দেয় শুনেছি। কিন্তু এক্ষেত্রে যারে দেখতে নারি তার চলন ব্যাঁকা। তাই ওরা রাজনীতির দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে গরিব লোকের টাকা আটকে দিয়েছে।’