স্বাধীনতা দিবসে লাল কেল্লাকে রাজনৈতিক প্রচারের মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করলেন মোদী!
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মঙ্গলবার সকালে ভারতের ৭৭তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লাল কেল্লায় ভাষণ দেওয়ার মঞ্চকে নিজের রাজনৈতিক প্রচারের মঞ্চ হিসাবে ব্যবহার করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী! যেমনটা সংসদে অনাস্থা বিতর্কের জবাবি বক্তৃতায় ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রচারের সুর বেঁধে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। যে মণিপুরের হিংসা নিয়ে বিরোধী জোট INDIA জোট অনাস্থা এনেছিল, সে অনাস্থা প্রস্তাবের জবাবি ভাষণের নিজের বক্তৃতার একদম শেষ পর্যায়ে মাত্র কয়েকটি শব্দই মোদী খরচ করেছিলেন মণিপুর নিয়ে। তাঁর ২ ঘণ্টা ২০ মিনিটের বক্তৃতার বড় অংশ জুড়েই ছিল নিজের সরকারের ‘সাফল্যের’ খতিয়ান এবং বিরোধী কংগ্রেসের প্রধানমন্ত্রীদের জমানার ‘ব্যর্থতার’ প্রসঙ্গ।
এদিন লালকেল্লা থেকেও চব্বিশের সুর বাঁধলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিশ্লেষকদের মতে, এদিন ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের বিউগল বাজিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী। নোটবন্দি, কৃষি আইনের মতো বিতর্কিত বিষয়ে বিরোধীদের তোপের জবাবেই সংস্কার বিরোধীতার তাশ খেলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশবাসীকে নিজের পরিবার হিসাবে সম্বোধন করে (এদিন আর ‘মিত্রোঁ’ বলে সম্মোধন করেননি) তিনি বলেন, ‘‘যে সব প্রকল্পের শিলান্যাস আমি করেছি, তার উদ্বোধনও আমার ভাগ্যে লেখা রয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’’ পরের বছর তিনি আবার লাল কেল্লায় পতাকা উত্তোলন করতে আসবেন বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। অর্থাৎ, কেন্দ্রে বিজেপিই যে আবার সরকার গড়বে এবংে তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদে বসবেন, নিজের মন্তব্যের মাধ্যমে কৌশলে সে কথাই কি স্পষ্ট করলেন মোদী?
আরেকটি লক্ষণীয় বিষয়, মণিপুর পরিস্থিতি নিয়েই স্বাধীনতা দিবসের ভাষণ শুরু করতে হলো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। লালকেল্লায় প্রধানমন্ত্রী বললেন, হিংসা হয়েছে মনিপুরে। তবে আপাতত শান্তির দিকে ফিরছে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য।
মে মাসের গোড়া থেকে মনিপুরে চলছে দুই জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। দেড়শোর বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। নির্যাতিত হচ্ছেন মহিলারা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী চুপ থেকেছেন। সংসদে তাঁকে মুখ খোলাতে অনাস্থা প্রস্তাব পর্যন্ত আনতে হয়েছে বিরোধীদের। অনাস্থা প্রস্তাবেও মোদী দীর্ঘ ভাষণে মণিপুর নিয়ে বলেছেন সামান্য।
পর্যবেক্ষকদের মত, অবজ্ঞার মনোভাব ক্ষোভ তৈরি করেছে কেবল উত্তর পূর্বে নয়, সারা দেশে। বিশেষ করে, মহিলাদের নগ্ন করে হাঁটিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের ভয়ংকর ভিডিও সামনে আসায়। সে কারণে এদিন মণিপুর নিয়েই ভাষণ শুরু করতে হলো মোদীকে।