প্রতিবন্ধকতা বলে কোন শব্দই নেই সুনীল ছেত্রীর অভিধানে
ছোট্টখাট্ট দেখতে এই খেলোয়াড় যখন ভারতীয় ফুটবলে পা রেখেছিল তখন সবাই নাক সিঁটকেছিল। স্ট্রাইকারের তো উচ্চতাটাই আসল। এই উচ্চতা নিয়ে কিছু করতে পারবে না। এরকম নানা প্রশ্নে জেরবার হতে হয়েছে সেই সময় সুনীল ছেত্রীকে।
বদলেছে ভারতীয় ফুটবলের গতি প্রকৃতি। আর সেই সঙ্গেই সুনীল হয়ে উঠেছেন ভারতীয় ফুটবলের মুখ। ভাইচুং ভুটিয়াকে সরিয়ে দেশের ফুটবলের পতাকা নিজের কাঁধে তো তুলে নিয়েছেন। বুঝিয়ে দিয়েছেন প্রতিভা থাকলে উচ্চতা কোনও প্রতিবন্ধকতা হতে পারে না।
১৯৮৪ সালের ৩রা অগস্ট সেকেন্দ্রাবাদে জন্ম সুনীল ছেত্রীর। ৫ ফিট ৭ ইঞ্চির ছেলেটি আজ ভারতের অধিনায়ক। দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ গোল তাঁরই ঝুলিতে । ইতিমধ্যেই দেশের হয়ে খেলেছেন ১০০ ম্যাচ।
মেসি, রোনল্ডোদের সঙ্গে এক তালিকায় নাম এসেছে তাঁর। পথটা খুব একটা মসৃণ ছিল না। ২০০১-২এ সিটি ফুটবল ক্লাব দিয়েই মোহনবাগানে প্রবেশ। সেই থেকে শুরু ভারতীয় পেশাদার ফুটবলার হিসেবে খেলা। ২০০২-৫ পর্যন্ত মোহনবাগানের হয়ে ১৮টি ম্যাচই খেলতে পেরেছিলেন। তার মধ্যেই করেছিলন ৮ গোল। ভাগ্য খুলে গেল জেসিটি থেকে। সেখানে পরের তিন বছর ভারতীয় ফুটবল সুনীল ছেত্রীর মধ্যেএ দেখতে পেল পরবর্তী ভাইচুং ভুটিয়াকে।
সুনীলের কথায়, সেই সময়ের জেসিটিতে ছিল ভারতীয় ফুটবলের সব বড় বড় নাম। তাদের মধ্যে গিয়ে পড়েছিলেন তিনি। কিন্তু গুটিয়ে না থেকে নিজেকেএ প্রমাণ করেছিলেন। জেসিটির জার্সিতে ৪৮ ম্যাচে ২১টি গোল রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। খুলে গেল ভারতীয় সিনিয়র দলের দরজা। সেই যে চলার শুরু তা এখনও অব্যহত রয়েছে।
মুম্বইয়ের মাটিতে ইন্টার কন্টিনেন্টাল কাপে করে ফেলেছেন আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সেঞ্চুরি। গোলের সংখ্যা ৬৪। যা স্পর্শ করেছে মেসির রেকর্ড। সামনে শুধু ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। যদিও মেসি, রোনাল্ডোর সঙ্গে তাঁর তুলনায় যথেষ্ট আপত্তি সুনীলের। তাঁর কথায়, ‘‘মেসি- রোনাল্ডোর সঙ্গে আমার তুলনাটা ঠিক নয়। আমি ওদের ফ্যান। ওরা অনেক বড় ফুটবলার।’’
স্ট্যাটিসটিক্সই এই তুলনা টেনে আনছে। কানসাস সিটি স্পোর্টিং ক্লাব দি পর্তুগালে খেলে বিদেশের মাটিতেও ভারতীয় ফুটবলের জয়ের পতাকা উড়িয়ে এসেছেন সুনীল।