৫১৪ বছরে পা! আজও জৌলুস হারায়নি বৈকুণ্ঠপুরের রাজবাড়ির মনসা পুজো
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আজও অমলিন বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির মনসা পুজো। শুরু হয়েছিল ১৫০৯ সালে। এখনও জাঁকজমকপূর্ণভাবেই হয় এই পুজো। এবছর পুজো ৫১৪ বছরে পদার্পণ করল এই পুজো। শুধু প্রাচীন ইতিহাস নয়, এর সাথে জড়িয়ে রয়েছে নানান বিশেষত্ব। এই রাজবাড়িতে মা পূজিত হন অষ্টমূর্তিতে। আছে অষ্টনাগের মূর্তিও। বেহুলা, লখিন্দর, গোদা-গোদানির মূর্তিও রয়েছে এখানে।
জনশ্রুতি, উত্তরবঙ্গে রাজবংশী সমাজের প্রথা মেনে আদিকাল থেকেই মা মনসা তথা মা বিষহরির পুজো চলে আসছে । জানা গেছে, ১৫০৯ সালে বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির মনসা পুজোর সূচনা করেছিলেন রাজা শিষ্য সিং। তারপর থেকেই রীতিনীতি মেনে প্রতি বছর ৩ দিন ধরে মনসা পুজো হয়ে আসছে। সন্ন্যাসীকাটা এবং বোদাগঞ্জের পর জলপাইগুড়িতে রাজধানী পরিবর্তন হলেও এই পূজা কখনও বন্ধ হয়নি।
আজ ১৮ আগস্ট শ্রাবণ মাসের সংক্রান্তিতে শুরু হচ্ছে পুজো। চলবে আগামী রবিবার ২০ অগস্ট পর্যন্ত। এই মনসা দেবীর বিগ্রহের সাথে অনন্ত, বাসুকি, পদ্মা, মহাপদ্ম, কুলীর, কর্কট, শঙ্খ, ইষ্টনাগের পৃথক মূর্তি থাকে। এছাড়াও থাকে বেহুলা, লখিন্দর, জরৎকারুর, গোদা-গোদানির মূর্তি।
অনেকের মতে, বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির পুজোয় বিগ্রহের যে চালচিত্র ব্যবহৃত হয়, তাতে মনসামঙ্গলের রীতিনীতির স্পষ্ট ছাপ আছে। এখানে পুজোর রীতিনীতিও অন্য জায়গার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। পুজোর ৩ দিন রকমের ভোগ তৈরি করা হয়। পুজো শুরুর দিনে ভোগ হিসেবে থাকে সাদা ভাত। দ্বিতীয় দিনে খিচুড়ি তৈরি করা হয়। শেষদিনে ভোগ হিসেবে দেওয়া হয় মিষ্টি। সেইসঙ্গে ভোগে ইলিশ, বোয়াল, চিতল, শোল এবং পুঁটি মাছও থাকে।
ঐতিহ্যবাহী এই পুজোয় সমাগম হয় উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ, অসম, বিহার থেকেও প্রচুর মানুষের। পুজোর মূল আকর্ষণ উত্তরবঙ্গের প্রাচীন বিষহরির গান এবং মেলা। পুজোর ৩ দিন সেই গান চলে। জানা গেছে, আগামী ২৩ অগস্ট পর্যন্ত চলবে এই মেলা ।