বাংলায় শিল্পোন্নয়নে কত টাকা বিনিয়োগ করতে চলেছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: পুজোর পরই বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আসর বসতে চলেছে রাজ্যে, তার আগেই বাংলাকে আড়াই হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক। এমন ধরনের অর্থ বরাদ্দ করতে বিশ্বব্যাঙ্কের কাছে দরবার করতে হয়। যদিও এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হয়েছে। এই প্রথম তারা নিজের এগিয়ে আসছে। বাংলার শিল্পসম্ভাবনা খতিয়ে দেখে অর্থ বরাদ্দ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। সহজ শর্তে ঋণ হিসেবে টাকা দেবে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। আজ, শুক্রবার বিশ্ব ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। অনুমোদনের জন্য বিষয়টি মন্ত্রিসভায় পেশ করা হবে বলেও খবর মিলেছে। ২০১৯ সালে রাজ্যের তদানিন্তন অর্থমন্ত্রী ও বাংলার আর্থিক উপদেষ্টা অমিত মিত্রের সঙ্গে বিশ্ব ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে কথা হয়েছিল। সেটিই এখন বাস্তবায়িত হাওয়ার পথে। আজ, শুক্রবার নবান্ন সভাঘরে বৈঠকে বেলা ৩টে নাগাদ বিশ্ব ব্যাঙ্কের পাশাপাশি রপ্তানি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ক্ষুদ্রশিল্পে বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই এবারের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের লক্ষ্য। বাংলার উৎপাদকদের সঙ্গে দেশ-বিদেশের বিনিয়োগকারীদের সমন্বয় বৃদ্ধি এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলার তৈরি পণ্যের রপ্তানি বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই এগোচ্ছে রাজ্য। স্বভাবতই রাজ্যে তৈরি পণ্যের চাহিদা এবং উৎপাদন, দুই বাড়বে। ফলে পণ্য মজুত ব্যবস্থা ও পরিবহণ ব্যবস্থা আরও উন্নত করে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য।
বিশ্ব ব্যাঙ্কের টাকায় পরিকাঠামোগত উন্নয়ন হবে রাজ্যে। উজ্জ্বল শিল্পসম্ভাবনা রয়েছে, বাংলার এমন জায়গাগুলিতে উন্নত রাস্তা এবং অন্যান্য পরিকাঠামো নির্মাণ করা হবে। পণ্য পরিবহণে গতি আনার লক্ষ্যে সড়ক, রেল ও জলপথের সমন্বয়ের উপর জোর দেওয়া হবে। লজিস্টিক ক্ষেত্রে যুক্ত ব্যক্তিদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। মনে করা হচ্ছে, বিশ্ব ব্যাঙ্কের এই পদক্ষেপ আগামীদিনে বাংলায় কর্মসংস্থানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে। বাংলার সুবিধাজনক ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য, বহু শিল্প সংস্থা উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিসহ জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে পণ্য সরবরাহের পথ হিসেবে বাংলাকেই বেছে নিচ্ছে। এই আবহে বিশ্ব ব্যাঙ্কের মাধ্যমে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ হলে, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বাংলায় ৫০ হাজার মানুষ কাজের সুযোগ তৈরি হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এক ই-কমার্স সংস্থা হরিণঘাটায় লজিস্টিক হাব খোলায় প্রায় ১১ হাজারেরও বেশি কর্মসংস্থান হয়েছে। এতেই অনুমান করা যায়, বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে তা কত সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান জোগাতে পারে। শিল্প বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে রপ্তানি বাড়বে। পোশাক, গহনা, ইঞ্জিয়ারিং সামগ্রী, চা ও সামুদ্রিক পণ্যের সঙ্গে যুক্ত শিল্প লভাবান হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।