জেনে নিন ঢাকুরিয়া লেক কালীবাড়ি প্রতিষ্ঠার অজানা ইতিহাস

পাঁচটি নরমুণ্ডের উপর বিরাজিত দেবী। লেক কালীবাড়ির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল স্বপ্নাদেশ পেয়ে।

August 19, 2023 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi
ঢাকুরিয়া লেক কালীবাড়ি। ছবি সৌজন্যে: Get Bengal

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ঢাকুরিয়া উড়ালপুলের পূর্বদিকে ঢাকুরিয়া লেক কালীবাড়ি। এই অঞ্চলের দক্ষিণাপণ মধুসূদন মঞ্চের ঠিক বিপরীতে লাল রঙা দালান বাড়িতেই ঢাকুরিয়ার দক্ষিণাকালী প্রতিষ্ঠিতা। এখানে মা কালী করুণাময়ী রূপে বিরাজমান। লেকের কাছে মন্দির বিরাজ করে বলে লোকে একে বলে লেক কালীবাড়ি। তবে মন্দিরটির প্রকৃত নাম ‘শ্রী শ্রী ১০৮ করুণাময়ী কালীমাতা মন্দির’।

পাঁচটি নরমুণ্ডের উপর বিরাজিত দেবী। লেক কালীবাড়ির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল স্বপ্নাদেশ পেয়ে। ১৯৪৯ সালে এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তন্ত্রসাধক হরিপদ চক্রবর্তী। মন্দিরের নাম দিয়েছিলেন শ্রীশ্রী ১০৮ করুণাময়ী কালীমাতা মন্দির। তখন দক্ষিণ কলকাতার কাঠামোটাই ছিল অন্যরকম। দিনের বেশিরভাগ সময় সাধক হরিপদ চক্রবর্তী মা কালীর সাধনা করতেন। সাধারণ মানুষের কাছে তিনি ছিলেন গুরুদেব। তাঁর সাধনায় খুশি হয়ে মা কালী নাকি তাঁকে দর্শন দিয়েছিলেন।

জনশ্রুতি, মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য সাধক হরিপদ চক্রবর্তী নাকি স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন। স্বয়ং মা কালী তাঁকে দেখা দিয়ে মন্দির প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দেন। সাধক ছিলেন দরিদ্র। মন্দির নির্মাণে যে বিশাল অর্থ খরচ তা বহন করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। সেকথা তিনি দেবীকে জানালে, তিনি আশ্বাস দেন যে, নিজের পুজোর দায়িত্ব তিনি নিজেই নেবেন। বর্তমানে দেবী যেখানে অধিষ্ঠিতা সেখানে আগে ছিল একটি পাতার কুটির, দোচালা টিনের ঘর। পরে তা মন্দির হয়। তারপর বহুবার তার সংস্কার হয়। এখানে বিগ্রহ কখনও সেজে ওঠে ফুলের সাজে। আবার কখনও বা প্রতিমাকে সাজানো হয় স্বর্ণালঙ্কারে।

তন্ত্রসাধনার সাধনার মাধ্যমে মানবজাতির শান্তি কামনার উদ্দেশ্যে সাধক হরিপদ চক্রবর্তী তৈরি করেছিলেন ‘পঞ্চমুণ্ডির আসন’। পাঁচটি নরমুণ্ড দিয়ে এই আসন তৈরি করা হয়েছিল। কালীমূর্তির পাশে সেই নরমুণ্ডির আসন আজ‌ও দেখতে পাওয়া যায়। মন্দির পাশ্ববর্তী গৃহে রয়েছে হরিপদ চক্রবর্তীর মূর্তি।

বর্তমানে করুণাময়ী কালীমাতা ট্রাস্ট কালীবাড়িটির দেখাশোনা করেন। লেক কালীবাড়ি প্রথা অনুসারে প্রত্যেকবারই কালীপুজোর দিন মাকে আমিষ ভোগ নিবেদন করা হয়। ভোগের মধ্যে দেওয়া হয় একাধিক রকমের মাছ, পাঁঠার মাংস, পাঁচ রকমের ভাজা, পোলাও, পাঁচমিশালি তরকারি এবং পায়েস।

নিত্যপুজোর সাথে সাথে প্রতি অমাবস্যায় বিশেষ পুজো ও দীপান্বিতা কালীপুজোয় মন্দিরে মহাসমারোহে পুজো করা হয়। প্রতিবছর পয়লা মাঘ বিগ্রহের প্রতিষ্ঠা দিবসে দেবীর উৎসব প্রতিপালিত হয়। পুজো উপলক্ষে কালী মন্দির উপচে পড়ে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের ভিড়ে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen