এক শাড়িতেই এক লাখ! কী রয়েছে তাতে? কতদিনে বোনা হল ‘নীলাম্বরী’?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: এক শাড়িতেই ১ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা! বাংলার এক গ্রামে তৈরি সম্পূর্ণ হাতে বোনা শাড়িটি বিক্রি হয়েছে বাণিজ্যনগরী মুম্বইতে। শাড়িটির নাম দেওয়া হয়েছে নীলাম্বরী। প্রাচীনকালের মসলিনের সঙ্গে জামদানির নকশা মিশিয়ে মিহি সুতোর কাজে শাড়িটি তৈরি করা হয়েছে। কালনার তাঁতশিল্পী জ্যোতিষ দেবনাথের কারখানায় ওই শাড়ি তৈরি হয়েছে। তাঁতশিল্পে জ্যোতিষবাবু খুবই পরিচিত নাম, তাঁতশিল্পের জন্য তাঁর খ্যাতি রয়েছে। জাতীয়স্তরে নানান সম্মান পেয়েছেন তিনি। ভারত সরকারের সন্তকবীর পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি। প্রবীণ জ্যোতিষবাবুর হাত ধরে বারুইপাড়া, নেপাকুলি, দত্ত-দ্বারিয়াটনসহ বিভিন্ন জায়গায় শতাধিক তাঁতশিল্পী কাজ করেন। মুম্বইয়ে ২৪-২৬ আগস্ট পর্যন্ত চলা হ্যান্ডলুম শাড়ির প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই তাঁর মসলিন-জামদানি শাড়িটি সকলের নজরে পড়ে। এক লক্ষ পঞ্চান্ন হাজার টাকায় কালনার শাড়িটি বিক্রি হয়।
শাড়িটি কেমন? কীভাবে তৈরি হল সেটি?
একটানা ছয় মাসেরও বেশি সময় নিয়ে শাড়িটি বোনা হয়েছে। ৩৫০ কাউন্ট সুতোয় বোনা ছয় মিটার লম্বা ও পঞ্চাশ ইঞ্চি বহরের শাড়িটির ওজন ৩৫০ গ্রাম। অতিসূক্ষ্ম! একটি আংটির মধ্যে দিয়ে গলে যেতে পারে শাড়িটি, প্রাচীনকালের উচ্চমানের মসলিন শাড়ির মতোই। শাড়িতে রয়েছে, নীল-সাদার যুগলবন্দী। নাম দেওয়া হয়েছে নীলাম্বরী।
জ্যোতিষবাবুর কথায়, পাওয়ারলুম আসায় তাঁতশিল্পের ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু শাড়ির কদর যাঁরা করেন, তাঁরা জানেন সূক্ষ্ম সুতোর শাড়ি মেশিনে তৈরি হয় না। প্রকৃত তাঁতশিল্পীদের হাত বোনা শাড়ির কদর এখনও আছে। মুম্বইতে সেটাই প্রমাণ হয়েছে। তাঁর মতে, বাংলার তাঁতশিল্পীদের নিয়ে ভিনরাজ্যে আগ্রহ রয়েছে। বাংলাতেও শাড়ির কদর আছে। শিল্পীদের কদরের মর্যাদা দিয়েই শাড়ি বুনতে হবে। কালনা থেকে ভারতের নানান প্রান্তে শাড়ি গিয়েছে, এমনকী জ্যোতিষবাবুর শাড়ি বিদেশেও গিয়েছে। সম্প্রতি বাংলা থেকে লক্ষাধিক টাকায় শাড়ি বিক্রি বয়নশিল্পীদের কাছে মাইল ফলক হয়ে উঠল। পুজোর মুখে এমন দর ওঠার খুশি তাঁতশিল্পীরাও।