রাজ্যে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ হোম অ্যাপ্লায়েন্সের আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড SOGO-র
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: স্পেন সফরে বাণিজ্য টানতে অনেকটাই সফল হয়েছেন বলে মনে করছেন অনেকে। বহুজাতিক বস্ত্র শিল্প সংস্থা জারা-র সঙ্গে বৃহস্পতিবার ১৪ সেপ্টেম্বর মাদ্রিদে বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। জারা পশ্চিমবঙ্গে একটি উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তোলার আগ্রহ দেখিয়েছে। শুক্রবার ১৫ সেপ্টেম্বর স্পেনের বণিক সভা ও সরকারের শিল্প বাণিজ্য মন্ত্রকের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার শিল্প সম্ভাবনার ছবিটা তুলে ধরেছেন।
বার্সেলোনা পর্বে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বাংলায় বিনিয়োগ প্রস্তাব রাখল হোম অ্যাপ্লায়েন্সের আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ‘সোগো’। স্পেন, চীন, তাইওয়ানের পর এবার কলকাতার কাছাকাছি কোথাও ইলেকট্রনিক্স হোম অ্যাপ্লায়েন্সের কারখানা গড়তে চাইছে তারা। রবিবার সন্ধ্যায় বার্সেলোনার এক হোটেলে প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে আলাপচারিতা পর্বে শিল্পপতি সতীশ রাইসিঙ্ঘানি ওই বিনিয়োগ প্রস্তাব রাখেন মমতার কাছে। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে হোম অ্যাপ্লায়েন্স তৈরি করছ আমরা। চীন, তাইওয়ানে কারখানা রয়েছে। গোটা বিশ্বে রপ্তানিও করছি। এবার আমরা দেশে কারখানা গড়তে চাইছি। কলকাতার কাছাকাছি জমি পেলে, সেখানেই তা গড়ব।’ এই প্রস্তাবে দৃশ্যত তৃপ্ত মমতা সমস্ত সাহায্যের আশ্বাস দেন প্রবাসী ওই শিল্পপতিকে। শুধু তাই নয়, সফরসঙ্গী মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এবং শিল্পসচিব বন্দনা যাদবের সঙ্গে যোগাযোগও করতে বলেন। ইতিমধ্যেই তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন রাইসিঙ্ঘানি। ইতিমধ্যে ভারতীয় সংস্থা ‘জয়পান’ এবং ‘ক্রম্পটন’-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে উৎপাদন শুরু করেছে বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড ‘সোগো’। তবে এবারের প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে, ভারতে তাদের প্রথম নিজস্ব কারখানা হবে কলকাতাতেই।
বিনিয়োগ টানার লক্ষ্যে স্পেন সফরে মমতার দ্বিতীয় সাফল্য এসেছে বার্সেলোনাতেই। আদতে শিলিগুড়ির বাসিন্দা, প্রবাসী শিল্পপতি কমল মিত্তাল বাংলায় নতুন দু’টি কারখানা এবং তাতে ২৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করেছেন। স্পেনের কনস্ট্যান্টির সংস্থা ট্রাভিপসের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কংক্রিটের রেলওয়ে স্লিপার তৈরির কারখানা রয়েছে বিশিষ্ট এই শিল্পপতি সংস্থা পি সি মিত্তাল গোষ্ঠীর। এই স্লিপার তৈরির ছাঁচ আসে নিউ জলপাইগুড়িতে মিত্তাল গোষ্ঠীর অপর একটি কারখানা থেকে। এদিন ট্রাভিপসের কারখানা পরিদর্শনে যায় মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল। সেই পর্বেই রাজ্যে নতুন বিনিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। মিত্তাল গোষ্ঠী জানিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে তারা এবার নিউ জলপাইগুড়িতেই ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে কংক্রিট স্লিপার তৈরির স্বয়ংসম্পূর্ণ কারখানা গড়বে।
মমতা বন্দোপাধ্যায় স্পেন সফরে এসে বোঝানোর চেষ্টা করছেন, বাংলায় ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ রয়েছে। প্রচুর দক্ষ শ্রমিক রয়েছে। বাংলায় সামগ্রিক ভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত। সমুদ্র বন্দর, বিমান বন্দর থেকে শুরু করে সড়ক পথে যোগাযোগের সুব্যবস্থা রয়েছে। তা ছাড়া সরকার একটি গভীর সমুদ্র বন্দরও গড়ে তুলতে চাইছে। তিনি আরও বলছেন, বাংলায় পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। সরবরাহ ব্যবস্থাও উন্নত। তা ছাড়া এশিয়ার বৃহত্তম কয়লা খনি দেউচা পাচামিও রয়েছে রাজ্যে। সেই সঙ্গে সরকার সুনির্দিষ্ট জমি নীতি নিয়ে রেখেছে। কোথায় কোথায় শিল্পের জন্য জমি দেওয়া যেতে পারে তা চিহ্নিত করা হয়েছে। এ জন্য ল্যান্ড ব্যাঙ্কও তৈরি হয়েছে।