খালিস্তানি আন্দোলনকে সমর্থন? কীভাবে বদলে গেল ভারত-কানাডা সমীকরণ?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: জি ২০ সম্মেলনের পর কানাডার সাথে সুসম্পর্ক হঠাৎ বদলে গেল তিক্ততায়। গত সোমবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অভিযোগ করেন, কানাডার নাগরিক ও খলিস্তানি জঙ্গি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যার আড়ালে ভারতের ভূমিকা রয়েছে। এরপরেই ভারতের শীর্ষ কূটনীতিককে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয় কানাডার বিদেশমন্ত্রী। ভারতও কড়া প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে, কানাডা সরকারের এই অভিযোগ, ‘অযৌক্তিক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’। এরপরেই কানাডার কূটনীতিককে দ্রুত ভারত ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। ভারতে নিযুক্ত কানাডার উচ্চপদস্থ কূটনীতিককে ৫ দিনের মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেয় বিদেশ মন্ত্রক।
ভারতে কানাডিয়ান হাইকমিশনার, ক্যামেরন ম্যাককে সাউথ ব্লক, নয়াদিল্লিতে MEA সদর দপ্তর ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। দেখুন সেই মুহূর্তের ভিডিও
কানাডায় খুন, সংগঠিত অপরাধের ঘটনা নতুন নয়। ট্রুডো সরকারের যুক্তি খণ্ডন করে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক পাল্টা অভিযোগ করেছে যে খলিস্তানিদের কানাডায় আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। খলিস্তানিদের বিরুদ্ধে কোনওদিনই ব্যবস্থাই নেয় নি কানাডার প্রশাসন। কানাডার অভ্যন্তরে অপরাধমূলক কাজকর্মের সাথে ভারতের কোনও যোগাযোগ নেই। কানাডার শীর্ষস্থানীয় নেতারা যেভাবে খালিস্তান ইস্যুকে জনসমক্ষে সমর্থন করছেন, তাতে রীতিমতো উদ্বিগ্ন ভারত। কানাডার প্রধানমন্ত্রীর দ্বারা ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ ভারত সম্পূর্ণ ভাবে খারিজ করছে। আমরা আইনের শাসনের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একটি গণতান্ত্রিক দেশ।
দিল্লিতে জি২০ সম্মেলনের পরেই কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর অভিযোগ, খালিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যায় মদত রয়েছে ভারতের RAW-এর। ট্রুডো জানিয়েছেন, কানাডা সিকিউরিটি এজেন্সিগুলি প্রামাণ্য অভিযোগ, হরদীপ সিং নিজ্জর নামে এক কানাডাবাসীর হত্যায় ভারতের এজেন্সির মদত রয়েছে। ভারত সরকারের এই ধরনের কার্যকলাপে কানাডা সরকার উদ্বিগ্ন। গত সপ্তাহে জি ২০ সম্মেলনে ব্যক্তিগতভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এই বিষয়ে জানিয়েছিলেন তিনি। এই ঘটনার পরেই কানাডার বিদেশমন্ত্রী মেলানিয়া জোলি ভারতের শীর্ষ কূটনীতিককে কানাডা থেকে বহিষ্কার করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুন কানাডার সুরিতে একটি গুরুদ্বারের সম্মুখে খালিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জরকে গুলি করে হত্যা করা হয়। জানা গিয়ছে যে, হরদীপ সিং নিজ্জর খালিস্তান টাইগার ফোর্সের মাথা ছিলেন। বহু বছর ধরেই কানাডার আস্তানা গেয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে বসেই ভারতে খালিস্তানি কার্যকলাপ চালাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। ভারতের গোয়েন্দাদের রিপোর্ট বলছে, খতরনাক লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংকে বিদেশে লজিস্টিক সাপোর্ট ও আর্থিক মদত দেওয়া শুরু করেছিল। ২০১৮ সালে কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো যখন ভারত সফরে এসেছিলেন, তখন পঞ্জাবের সেইসময়ের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং খালিস্তানি জঙ্গিদের একটি লিস্ট ট্রুডোকে দিয়েছিলেন। সেই তালিকায় নিজ্জরের নামও ছিল। ২০২০ সালে নিজ্জরকে জঙ্গি ঘোষণা করে ভারত। ২০১০ সালে পাতিয়ালার একটি মন্দিরের সামনে বোমা বিস্ফোরণে নিজ্জরের বিরুদ্ধে FIR করা হয়েছিল। এই নিজ্জরের মাথার দাম ১০ লক্ষ টাকা ঘোষণা করা হয়েছিল।