বাংলার দুগ্গা পুজো: বর্ধমানের শতাব্দী প্রাচীন পটেশ্বরী দুর্গার বাহন ঘোড়া, কেন জানেন?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ৩৫০ বছরেরও বেশি প্রাচীন বর্ধমানের পটেশ্বরী দুর্গা। এই পুজোর সূচনা করেছিলেন মহারাজ মহাতাব চাঁদ।। এখানে বিগ্রহের বদলে পটে আঁকা দুর্গাকে পুজো করা হয়।
বর্ধমান মহারাজের আমলে মহাসমারোহে পটেশ্বরী দুর্গাপুজো হত বর্ধমান রাজবাড়িতে। রাজ পরিবারের প্রথা অনুযায়ী এই পরিবারের মহিলারা জনসমক্ষে আসতেন না। রাজবাড়ি থেকে গোপন রাস্তা দিয়ে তাঁরা এই মন্দিরে প্রবেশ করতেন এবং মন্দিরের দোতলায় দর্শনির মাধ্যমে পুজো ও নানান অনুষ্ঠান দেখতেন। মন্দিরে থাকা মানুষজন এই রাজ পরিবারের মহিলাদের দেখতে পেতেন না। এখনও আগের মতই পুরাতন নিয়ম মেনেই দেবী পটেশ্বরীর পুজো হয়।
জনশ্রুতি, রাজার আমলের রীতিনীতি মেনেই লক্ষ্মীনারায়ণ জিউ মন্দিরে মহালয়ার দিন থেকে আজও দুর্গাপুজো শুরু হয় । পুজোর সময় রাজপরিবারের বংশধর প্রণয় চাঁদ মহাতাব ৯দিন সস্ত্রীক বর্ধমানে থাকেন এবং নিজেই পুজো করেন। আজ থেকে প্রায় ৩৫০ বছর আগে, দেবী দুর্গা এখানে শালকাঠের কাঠামোর উপর প্রতিষ্ঠিত হয়। কাঠের কাঠামোর উপর নানান রং দিয়ে নিপুণ তুলির টানে তৈরি হয় দশভুজার একচালার মূর্তি।
এখানে একমাত্র গণেশ ছাড়া দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক এবং অসুরের মুখের ছবি এমন ভাবে আঁকা আছে যেখানে শুধুমাত্র একটি চোখ দেখা যায়। শুধু তাই নয় মা দুর্গার বাহন সিংহের জায়গায় আঁকা আছে ঘোড়ার ছবি। ১২ বছর অন্তর একবার রঙ করা হয় পটেশ্বরী দুর্গার। কিন্তু রঙের পর মা দুর্গার রূপের কোনও পরিবর্তন হয়না। দীর্ঘ বছর ধরে রূপ একই রয়েছে দেবীর।
এখানে বলি প্রথা আছে। তবে মহিষ বা ছাগ বলি হয়না। রাজাদের আমলে কুমড়ো বলি হত। এখন অবশ্য কুমড়ো বলির জায়গায় মণ্ডা বলি হয়। অষ্টমীর দিন পটেশ্বরীর সামনে নবকুমারী পুজো হয়।
পথ নির্দেশ: