অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস
অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর যেমন একাধারে ছিলেন অসাধারণ চিত্রশিল্পী তেমনিই ছিলেন এক দক্ষ ঔপন্যাসিক। জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্ম তাঁর। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাইপো।
আজ তাঁর জন্মদিনে পড়ে ফেলুন তাঁর শ্রেষ্ঠ উপন্যাসগুলিঃ
শকুন্তলা (১৮৯৫)
অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম বই। সংস্কৃত সাহিত্য অবলম্বনে লেখা এই শকুন্তলা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাল্য গ্রন্থাবলী প্রকাশে উদ্যোগী হলে তাঁরই অনুরোধে অবনীন্দ্রনাথ শকুন্তলা রচনা করেন। এই বই রচনাকালে রবীন্দ্রনাথ অবনীন্দ্রনাথকে অভয় দিয়ে বলেছিলেন, “তুমি লেখই-না, ভাষার কিছু দোষ হয় আমিই তো আছি।”
ক্ষীরের পুতুল (১৮৯৬)
অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা অন্যতম সেরা উপন্যাস। দীপনগরের রাজার দুই রানি ছিল, একজন সুয়োরানি এবং অন্যজন দুয়োরানি। রাজা সুয়োরানিকে ৭টা প্রাসাদ, ৭০০ পরিচারিকা, ৭ রাজ্য থেকে সেরা অলঙ্কার, ৭টা উদ্যান এবং ৭টা রথ উপহার দিয়েছিলেন। তিনি দুয়োরানিকে অবহেলা করেছিলেন এবং তাকে একটা ভাঙা ঘর, একটা বধির ও বোবা দাসী, ছেঁড়া পোশাক এবং নোংরা বিছানা দিয়েছিলেন। সাথে দিয়েছিলেন একটি মায়াবী বানর ছানা। আর সেই নিয়েই গল্প।
রাজকাহিনী (১৯০৯)
টডের রাজপুত্দের কাহিনি অবলম্বনে মধ্যযুগীয় রাজপুত রাজাদের বীরত্ব, ত্যাগের কাহিনি। টডের গল্প প্রেরণা হলেও রাজকাহিনিকে রূপ্ রেখা দিয়েছেন অবনীন্দ্রনাথ নিজের মতো করেই।
নালক (১৯১৬)
‘নালক’ হল গৌতমবুদ্ধের গল্প। দেবলঋষি যোগে বসেছিলেন। ছোট্ট ছেলে নালক ঋষির সেবা করছিল। এমন সময় অন্ধকারে আলো ফুটল। চাঁদের আলো নয়, সূর্যের আলো নয়, সমস্ত আলো মিশিয়ে এক আলোর আলো। সন্ন্যাসী নালককে বললেন, কপিলাবস্তুতে বুদ্ধদেব জন্ম নেবেন। আমি চললাম। একলা নালক চুপ করে বসে রইল বটতলাতেই। তার ধ্যানমগ্ন চোখের সামনে ফুটে উঠতে লাগল বুদ্ধের সারা জীবনের ছবি। একের পর এক।
বুড়ো আংলা (১৯৪১)
নাম রিদয়, কিন্তু ছেলেটা আসলে ছিল হৃদয়হীন। তার উপর যাকে বলে একেবারে বিচ্ছু ছেলে। নষ্টামি করেই দিন কাটত তার। মানুষ বলো, পশুপাখি বলো, কীটপতঙ্গ বলো – সব্বাই অতিষ্ট তার জ্বালাতনে। একদিন সেই বিচ্ছু রিদয় লাগল গণেশঠাকুরের পিছনে। আর যাবে কোথায়! ভীষণ রেগেমেগে গণেশঠাকুর তাকে এমন অভিশাপ দিলেন যে, দেখতে-না-দেখতে বুড়ো আঙুলের মতো ভয়ানক ছোট হয়ে শেষাবধি বুড়ো আংলা যক হয়ে গেল রিদয়। — তাই নিয়েই এই উপন্যাস, ‘বুড়ো আংলা’। লেখকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস।