দুর্গা পুজোর মণ্ডপ ঢাকের তালে মাতিয়ে তুলতে প্রস্তুত অশোকনগরের ‘দশভূজা’রা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: পুজোর বাকি আর মাত্র কটা দিন বিভিন্ন ক্লাব গুলিতে চলছে প্যান্ডেল তৈরির প্রস্তুতি। দেবীবরণের প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেছে অনেক জায়গাতেই। কিছুতেই আজ আর পিছিয়ে নেই মহিলারা। বিমান উড়ানো থেকে সংসার সামলানো সবটাই অবলীলায় করছেন তাঁরা। যেমন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অশোকনগরের একদল মহিলা। বছরের অন্যান্য সময় তাঁদের দায়িত্ব সংসার সামলানো। আর পুজোর কটা দিন তাঁরা মণ্ডপে মণ্ডপে গিয়ে আনন্দ দেন মানুষকে। তাঁদের ঢাকের বোলেই হয় উমার আরাধনা।
অশোকনগরের রঞ্জনা, সুমিত্রা, করুণা, গীতাদের প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। গ্রামের অভিজ্ঞ ঢাকি সজল নন্দীর কাছে তালিম নিয়ে এখন বিভিন্ন জেলা, এমনকী, অন্য রাজ্যেও দাপিয়ে বেড়ান তাঁরা। গত কয়েক বছর ধরেই পুরুষ ঢাকিদের সঙ্গে টেক্কা দিয়ে বাদ্যি বাজিয়ে মণ্ডপ মাতিয়ে তুলছেন এই ‘দুর্গা’রা। কেউ গৃহিণী, তো কেউ অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। পুজোর সময় তাঁদের একটাই পরিচয়— ঢাকি। পুজোর আগে তাই চলছে তালিমের চূড়ান্ত পর্বের প্রস্তুতি। এলাকাবাসিদের কথায়, মহিলা ঢাকিদের ঢাকার আওয়াজে চারিদিকে যেন মনে হচ্ছে পুজো পুজো। ঢাকের তাল তুলে নিজেদের ঝালিয়ে নিচ্ছেন তাঁরা।
কয়েক বছর আগে অশোকনগর পুরসভার কয়াডাঙা নট্টপাড়ায় গ্রামের মেয়েদের নিয়ে ঢাকের তালিম দেওয়া শুরু করেন সজল নন্দী। এখন তাঁর দলে মহিলা ঢাকির সংখ্যা প্রায় একশো জন। চিরাচরিত ঢাক বাজানোর বাইরেও নানা কৃৎকৌশল জানেন অশোকনগরের শিল্পীরা। এখানে ঢাকিরা মাথায় কুলো, তার উপর কলসি আর ব্যাটারির আলো নিয়ে নাচতে নাচতে ঢাক বাজাতে পারেন। বেশিরভাগ মহিলাই এই পেশায় এসেছেন সংসারের হাল ধরতে। সারা বছর কোনওমতে কেটে গেলেও পুজোর দিকে তাকিয়ে থাকেন সবাই। শিক্ষক সজল বলেন, অধিকাংশ মহিলার ঢাকির অর্থনৈতিক অবস্থা খুব খারাপ। সংসারে সঙ্কট থাকলেও ঢাকের বোলে তা ফুটে ওঠে না।
শুধু জেলায় নয়, জেলার পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ম জায়গায় ঢাক বাজানোর ডাক আসছে এই মহিলা ঢাকিদের। পুজোর সময় অন্যান্য মহিলারা রঙিন শাড়ি পড়ে পুজো মণ্ডপে যান, তখন অশোকনগরের এই ‘দশভূজা’রা বিভিন্ন মণ্ডপ মাতিয়ে তুলবেন ঢাকে তালে।