বঙ্গ BJP-র সদর দপ্তরে কামান দাগছে কর্মী-সমর্থকরা, চরম অস্বস্তিতে পদাধিকারীরা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বঙ্গ বিজেপি’র গোষ্ঠী কোন্দল কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে তার আঁচ পাওয়া গেল বৃহস্পতিবার। জেলোয় বিজেপি’র নেতা-কর্মীদের মধ্যে যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ রয়েছে তা এবার আছড়ে পড়তে শুরু করেছে রাজ্য সদর দপ্তরে। বৃহস্পতিবার মূলত বিভিন্ন জেলা থেকে আসা দলের ‘আদি’ নেতা, কর্মীরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব ‘নতুন’দের গুরুত্ব দিতে গিয়ে দীর্ঘ দিন দলের সঙ্গে থাকা নেতা-কর্মীদের ভুলতে বসেছে। এমন বিক্ষোভ জেলায় বা কলকাতায় আগেও হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার শীর্ষ নেতাদের ছবিতে জুতো ছোড়া থেকে রাস্তায় ফেলে লাথি মারতে দেখা গিয়েছে বিক্ষোভ দেখাতে আসা বিজেপি কর্মীদের।
দলের আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য, সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা দলের প্রাক্তন সদর কার্যালয় মুরলীধর সেন লেনে জড়ো হয়ে শামিল হন বিক্ষোভে। জেলা থেকেও কর্মীরা কলকাতায় এসে নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিলেন। পোড়ানো হল অমিত মালব্য, অমিতাভ চক্রবর্তীদের কুশপুতুল।
বিজেপি এখন মূলত পরিচালিত হয় বিধাননগরের সেক্টর ফাইভের দপ্তর থেকে। তবে খাতায়কলমে রাজ্যের সদর দপ্তর উত্তর কলকাতার মুরলীধর সেন লেনে। সেই দপ্তরেই ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছিল ‘বিজেপি বাঁচাও কমিটি’। জানা গিয়েছে, বীরভূম, দুই ২৪ পরগনা, হুগলি, হাওড়া থেকে কর্মীরা আসেন বিক্ষোভ দেখাতে।
বুধবারও বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলায় নবনিযুক্ত সভাপতি তরুণকান্তি ঘোষকে সরানোর দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন দলেরি কর্মী-সমর্থকরা। অভিযোগ, তরুণকান্তি ঘোষকে সরানোর দাবিতে একাধিকবার তাঁরা আর্জি জানিয়েছিলেন দলের রাজ্য নেতাদের কাছে। সম্প্রতি বারাসতে এ নিয়ে একাধিকবার বিজেপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। বুধবার বারাসতের জনা সত্তর বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মী দল বেঁধে হাজির হন সল্টলেকের অস্থায়ী রাজ্য দপ্তরে।
বৃহস্পতিবার বিক্ষোভের সামনের দিকে ছিলেন রামপুরহাটের বিজেপি নেতা অভয়শঙ্কর রায়ের বক্তব্য, ‘‘নতুনদের জায়গা ছেড়ে দিতে আমরা রাজি রয়েছি। কিন্তু তার জন্য বিজেপিকে বিক্রি করে দিতে দেব না। আমরা নেরেন্দ্র মোদীকে আবার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চাই। কিন্তু বর্তমান রাজ্য নেতৃত্ব তৃণমূলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলছে। জেলায় জেলায় একই ছবি। এর পরিবর্তন না-হলে এমন বিক্ষোভ চলতেই থাকবে।
বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। অথচ বঙ্গ বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল ক্রমশ আরও কদর্য জায়গায় পৌঁছচ্ছে। একটি জেলায় ক্ষোভ নিরসনের চেষ্টা হচ্ছে তো আর এক জেলায় তা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার, দলের সর্বোচ্চ সাংগঠনিক নেতা অমিতাভ চক্রবর্তীদের পার্টি অফিসে তালাবন্দি হয়ে রাখছেন দলেরই কর্মীরা। বুধবার এবং বৃহস্পতিবার তা চূড়ান্ত আকার ধারন করল।
বৃহস্পতিবার, রাজ্য বিজেপি’র প্রাক্তন সভাপতি ও সাংসদ দিলীপ ঘোষ আবার দীর্ঘদিন পর দলের গোষ্ঠী কোন্দল নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুললেন। বৃহস্পতিবার প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে পুরনো ভঙ্গিতে তিনি বলেন, ‘‘নতুনদের মতো পুরনোদের কথাও শোনা দরকার। তা না হলে দলের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিচ্ছে এবং তা মাঝেমাঝে প্রকাশ্যে এসে যাচ্ছে।’’