বাংলার দুগ্গা পুজো: বাঁশবেড়িয়ার কুণ্ডু বাড়িতে শাক্ত ছেড়ে বৈষ্ণব মতে পুজোর রহস্য জানেন?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: কুণ্ডু বাড়ির পূর্বপুরুষদের ঝাড়খণ্ডে জমিদারি ছিল আর তার পাশাপাশি ব্যবসাও ছিল । সপ্তগ্রাম বন্দর দিয়ে ঘি, গুড়, মশলা ইত্যাদি বিদেশে পাঠাত তারা। ব্যবসার সূত্রে বাঁশবেড়িয়ার খামারপাড়ায় বসতি ও জমিদারি স্থাপন করেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, কুণ্ডু পরিবারের পূর্বপুরুষ ভুবনচাঁদ কুণ্ডু প্রায় ২৭৯ বছর আগে সূচনা করেছিলেন দুর্গাপুজো।
প্রথমে শাক্ত মতে হতো পুজো। তারপর শুরু হল বৈষ্ণব মতে পুজো। এবার আসি সেই ঘটনায়। অষ্টমী পুজো চলছিল তখন। সদর দরজা খোলা। সেখান দিয়ে দালানে ঢুকে পড়েছিল এক প্রতিবেশীর বলির ছাগল। ছাগলটিকে ধরেবলি দিয়ে দেওয়া হল। এই ঘটনার পর পরিবারে ধ্বংস লীলা শুরু হয়। একের পর এক মৃত্যু। ব্যবসায় লোকসান। জাহাজডুবির ঘটনা ঘটতে থাকে। একের পর এক প্রলয়ে দিশেহারা হয়ে গিয়েছিল বাঁশবেড়িয়ার খামারপাড়ার কুণ্ডু পরিবার। তারপর পরিবারের কুলপুরোহিতের পরামর্শে বলি প্রথা বন্ধ করে শুরু হল বৈষ্ণব মতে পুজো। তারপর থেকেই ধীরে ধীরে শ্রীবৃদ্ধি হয় ব্যবসার। সেখান থেকে আজও বৈষ্ণব মতেই পুজো চলে আসছে কুণ্ডু পরিবারে। সিংহবাহিনী অসুরনাশিনী দুর্গার বদলে তখন থেকে শিবদুর্গার পুজো হয়ে আসছে।
এই বাড়িতে জন্মাষ্টমীতে হয় কাঠামো পুজো। এরপর প্রতিমা সূচনা হয় প্রতিমা তৈরির কাজ। প্রতিপদে হয় বোধন। অষ্টমীতে হয় কুমারী পুজো। নবমীতে ধুনো জ্বালিয়ে আনন্দে সামিল হন পরিবারের সদস্যরা। দিনের বেলায় ভোগে দেওয়া হয় চাল ও ফলের নৈবিদ্য। রাতে লুচি ও মিষ্টির ভোগ। দশমীতে বিসর্জন। একাদশীতে সত্যনারায়ণের পুজো দিয়ে সমাপ্তি হয় পুজোর।