‘সীমানা, দ্য এজ’: মনের অসুখ নিয়ে বানানো ডাক্তারবাবুদের ছবি
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: শরীরের অসুখকে যতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়, মনের অসুখকে ঠিক ততটাই অবহেলা করা হয়। সে’কারণেই হয়ত একুশ শতকের সবচেয়ে বড় অভিশাপ মনে করা হয় অবসাদকে। আলোর মাঝেই লুকিয়ে থাকে আঁধারের ভ্রুকুটি। আশা, স্বপ্নভঙ্গের ব্যথা, পেশাগত প্রতিযোগিতা, অপ্রাপ্তি, সম্পর্কের টানা পোড়েন ইত্যাদি থেকেই জন্ম নেয় হতাশা। কমবেশি প্রায় সব্বাই কোনও না কোনও মানসিক ব্যাধির শিকার। অবসাদের গ্রাস থেকে কেউ কেউ নিজেকে সরিয়ে আনতে পারেন। কেউ কেউ পারেন না। যাঁরা অবসাদের গ্রাস পেরোতে পারেন না, তাঁরাই জীবনের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। ডুবে যান অন্ধকারে। একটা সময় জীবন শেষ করে দিতেও তাঁদের হাত কাঁপে না। এভাবেই অবসাদ জন্ম দেয় আত্মহত্যার প্রবণতার। বাস্তব জীবনের সেই গল্প নিয়েই তৈরি হয়েছে ছবি। কেবল অবসাদ, আত্মহত্যার প্রবণতা নয় তা থেকে ফিরে আসার পথের কথাও রয়েছে ডাক্তারবাবুদের ছবিতে। মানুষকে আলোর পথের হদিশ দেয় চিকিৎসক শুদ্ধসত্ত্ব চট্টোপাধ্যায়ের ৪০ মিনিটের শর্ট ফিল্ম ‘সীমানা, দ্য এজ’। ছবিটি ‘গ্লোবাল ইন্ডিপেনডেন্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অফ ইন্ডিয়া’ ও ‘সাউথ এশিয়ান শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এ দেখানোর আমন্ত্রণ পেয়েছিল।
পড়ুয়া থেকে উঠতি অভিনেতা, মডেল, তরুণ প্রজন্ম এমনকি খোদ চিকিৎসকদের মনেও থাবা বসায় মানসিকব্যাধি। মেজিকেল কলেজ পড়ুয়াদের জীবনেও হানা দেয় অবসাদ। ছবিজুড়ে তা দেখানো হয়েছে। কীভাবে একাকিত্ব গ্রাস করে। জয়, মহুয়া, অন্বেষা, তুহিনের মতো চরিত্রগুলো যেন বাস্তব থেকে উঠে এসেছে। ছবিতে অবসাদের বিভিন্ন ধাপের পাশাপাশি তার থেকে মুক্তির উপায়ও দেখানো হয়েছে। ছবিতে নানা বিভাগের বিশিষ্ট চিকিৎসকেরা অভিনয় করেছেন। ছবির সঙ্গে যুক্ত সকলেই ডাক্তার। অতিথিশিল্পী হিসেবে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় এবং পরিচালক রাজ চক্রবর্তীকে দেখা গিয়েছে। ‘প্রোটেক্ট দ্য ওয়ারিয়র’ সংগঠনের সমস্ত চিকিৎসক এই ছবির সঙ্গে যুক্ত। ছবির প্রযোজক চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই এবং চিকিৎসক অভীক ঘোষ।
ছবির শুটিং হয়েছে অ্যাপোলো হাসপাতালে এবং কলকাতার বিভিন্ন অংশে। ছবির কাহিনি মৌসুমী দত্তের, চিত্রনাট্য লিখেছেন খোদ ছবির পরিচালক। ছবিটিতে রয়েছে তিন জন মনরোগ বিশেষজ্ঞের মতামত—চিকিৎসক জয়রঞ্জন রাম, চিকিৎসক অঞ্জন ভট্টাচার্য এবং চিকিৎসক নীলাঞ্জন। চিকিৎসক, অতিথি শিল্পী এবং অ্যাপোলো হাসপাতাল, কেউ কোনও পারিশ্রমিক নেননি। অবসাদের জেরে জীবনের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ, ছবিটি দেখে ফিরে আসে জীবনপথে, এমনই আশা নির্মাতা চিকিৎসকদের। ছবিটিতে আশার গল্পও রয়েছে, সমস্যার সমাধান হচ্ছে, বেঁচে থাকার রসদ মিলছে সব্বাই জীবনে ফিরে আসছে এমনই ‘পজিটিভ ভাইব’ রয়েছে ছবিতে। নিরাশ না হয়ে বেঁচে থাকা, জীবনকে উপভোগ করা এবং প্রতিকূল পরিস্থিতিকে জয় করার বার্তা বহন করে ছবিটি।