দুর্গাপুজো শেষ হতেই এবার ভান্ডানি পুজোয় মেতেছেন উত্তরবঙ্গের মানুষ
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: উত্তরবঙ্গে ফের চার দিনের পুজো। মহিষাসুরমর্দিনীর আরাধনা শেষে উত্তরবঙ্গে আর এক দুর্গার পুজো। একাদশীর দিন পূজিতা হলেন ভান্ডানি। রাজবংশীদের বিশ্বাসে তিনিই বনদুর্গা। ভান্ডানি কিন্তু সিংহবাহিনী নন, তাঁর বাহন বাঘ। দুর্গাপুজোর মতেই চার দিন চলবে ব্যাঘ্রবাহিনীর পুজো।
এই পুজোকে ঘিরে নানা গল্প প্রচলিত আছে। কথিত আছে, দুর্গা কৈলাসে চলে গিয়েও আবার মর্তে ফিরে আসেন। হিমালয়ের পাদদেশে একদল রাখালকে বাঘের ভয় দেখান। রাখালরা ভয় পেয়ে তাঁর পুজো করে। লোককথা অনুযায়ী ‘ভন্ডামি’ করে দুর্গা পুজো নেন বলে এই পুজোকে ভান্ডানি পুজো বলা হয়। ভান্ডানির প্রতিমা বিসর্জন হয় না। অন্য এক লোককথায় কৈলাসে যাওয়ার সময় এলাকার মানুষের দুঃখ, দুর্দশা দেখে শস্য ও ধনভান্ডার্ ভরিয়ে দেন বলে দুর্গাকে ‘ভান্ডারি’ নামে পুজোর প্রচলন হয়। পরে ভান্ডারই হয়ে যান ভান্ডানি। দেবীর নামে পায়রা উড়িয়ে দেওয়ার রীতি আছে উত্তরবঙ্গে। পাঁঠা বলিও দেওয়া হয়।
এ বছরও শ্রীশ্রী সির্দ্দার মা ভাণ্ডানি পুজো ও মেলা বসতে চলেছে ময়নাগুড়ির দোমোহনিতে। দোমোহনির রেল কলোনি বাবুপাড়া যুব সঙ্ঘের উদ্যোগে এই মেলা হবে। আজ, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হবে পুজো। একদিনের মেলায় ময়নাগুড়ি ছাড়াও আশপাশের এলাকা থেকে লোকজন আসেন। দোমোহনির বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ একত্রিত হয়ে এই পুজো করে থাকেন। এদিকে, পুজো ও মেলা ঘিরে ২৪ ঘণ্টা আগে বৃহস্পতিবার জোর তৎপরতা শুরু হয়ে যায় ক্লাব সদস্যদের মধ্যে। স্থানীয় মৃৎশিল্পী রামপ্রসাদ পাল কয়েক দশক ধরে ভাণ্ডানি দেবীর মূর্তি তৈরি করে আসছেন বলে ক্লাব সদস্যরা জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দোমোহনির বাবুপাড়ার ভাণ্ডানি দেবী অত্যন্ত জাগ্রত। দেবীর শরণাপন্ন হলে মনোবাঞ্ছা পূরণ হয়। সেই কারণে পুজো দিতে ভক্তদের লম্বা লাইন পড়ে যায়। পুজোর সময় চলে পায়রা ও পাঁঠা বলি।