কালীর সামনে রামপ্রসাদকে বলি দিতে নিয়ে গেল ডাকাতরা, তারপর ঘটল কী?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: রামপ্রসাদ ফিরছেন মধ্যপ্রদেশ থেকে, ত্রিবেণী পেরিয়ে হালিশহর যাওয়ার কথা। ত্রিবেণী তখন জঙ্গলে ঢাকা, বাঘ দাপিয়ে বেড়ায়। রঘু ঘোষ ও বিধুভূষণ ঘোষ নামে দুই ডাকাতের রাজত্ব সেখানে। তারা স্বপ্নে কালীকে দেখেন। স্বপ্নে পাওয়া চেহারা অনুযায়ী মূর্তি গড়ে ডাকাতরা মাতৃরূপে জ্ঞান করতেন কালীকে। ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে মাকে স্নান করিয়ে পুজো দিতেন। ডাকাতি শেষেও পুজো হত। নরবলি প্রথা চালু ছিল। মগরার কাছে বিধু ও রঘু ডাকাতের হাতে ধরা পড়লেন রামপ্রসাদ।
কালীর সামনে রামপ্রসাদকে বলি দেবে বলে ঠিক করল ডাকাতরা। হাড়িকাঠে মাথা দিতেই গান ধরলেন রামপ্রসাদ…
‘তিলেক দাঁড়া ওরে সমন
বদন ভরে মাকে ডাকি
বিপদ কালে ব্রহ্মময়ী
আসেন কি না আসেন দেখি।’
রামপ্রসাদের মুখাবয়বের মধ্যেই কালীর ছবি ফুটে উঠেছিল। বিহ্বল হয়ে পড়ে ডাকাতরা। কান্নায় ভেঙে পড়ে ডাকাতরা। রামপ্রসাদকে ছেড়ে দেন তারা। নরবলি প্রথাই চিরতরে বন্ধ করে দেয় তারা। তবে এখনও শনিবার, মঙ্গলবার, অমবস্যায় ছাগ বলি হয়। মন্দিরে নিত্য পুজো হয়। কালী পুজোর দিন বিশেষ পুজো হয়। কালীকে জাগিয়ে স্নান করিয়ে ভোগ নিবেদন হয়। সকাল আটটা থেকে শুরু হয় ভক্তদের পুজো দেওয়া। দুপুরে খিচুড়ি, পাঁচ রকম ভাজা, একাধিক তরকারি দিয়ে ভোগ দেওয়া হয়। তারপর ভক্তদের জন্য মন্দির খুলে দেওয়া হয়। রাত ১১টা থেকে মন্দির বন্ধ করে নিশি পুজো শুরু হয়। বলির পাঁঠার মাংস দেওয়া হয়। সরায় কাঁচা মাংসের সঙ্গে থাকে পান, সুপারি, কলা ও মিষ্টি। রাতে লুচি, খিচুড়ি, নাড়ু, পায়েস, পাঁচ রকম ভাজা, চচ্চড়ি, ফুলকপি ও বাঁধাকপি ও অন্যান্য তরকারি। কাতলা মাছের ঝাল, রুই মাছ ভাজা, চাটনি দেওয়া হয়। ভোগে ল্যাটা মাছ পোড়া দেওয়ার রীতি রয়েছে। ল্যাটা মাছ মন্দিরের মহাপ্রসাদ। ভক্তদের বিশ্বাস, কালীকে সকলের মনোবাঞ্ছা পূরণ করেন।