মালদহের বুলবুলচন্ডীতে কীভাবে সূচনা হয়েছিল ৪২ ফুটের বড়কালী পুজো?

হবিবপুরের বুলবুলচণ্ডীর বিশেষত্ব হল অতিকায় প্রতিমা। এখানে দেবীর উচ্চতা ৪২ ফুটের।

October 14, 2025 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: পাঁচ বন্ধুর বন্ধুত্বের জয়গাথায় সূচনা হয়েছিল মালদহের হবিবপুরের বুলবুলচন্ডীতে বড় কালী পুজো। কেবল কার্তিক মাসের অমাবস্যায় একদিনের পুজো নয়, এখানে ১৩ দিন ধরে পুজো পান। এটাই এখানকার বিশেষ রীতি, বা বিশেষত্ব। পুজোর ১৪তম দিনে দেবীর বিসর্জন হয়। হবিবপুরের বুলবুলচণ্ডীর বিশেষত্ব হল অতিকায় প্রতিমা। এখানে দেবীর উচ্চতা ৪২ ফুটের।

আজ থেকে সাড়ে সাত দশক আগে পাঁচ বন্ধুতে একজোট হয়ে মায়ের পুজো শুরু করেছিলেন। এই পুজো নিয়ে এক কিংবদন্তি ছড়িয়ে রয়েছে। জানা গিয়েছে, ১৯৪৯ সালে বুলবুলচণ্ডী স্থানীয় বাসিন্দা, ফেরিঘাটের এক কেউকেটা কর্মী স্বপ্নাদেশ পেয়ে, তার বন্ধুদের নিয়ে কালীপুজোর শুরু করেন। তখনও জমিদারি প্রথা ক্ষয়িষ্ণু হলেও ছিল। তৎকালীন জমিদার এভাবে সর্বজনীন কালীপুজো মেনে নিতে পারেননি। পুলিশে অভিযোগ জানিয়ে ফেরিঘাটের ওই কর্মী ত্রিবেণী সিং ও তাঁর সঙ্গীদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে পুজোর পক্ষে জনমত তৈরি হলে পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয় বাধ্য হয়। তারপর থেকে জাঁকজমকসহকারে এই কালীপুজো চলে আসছে।​

প্রথম পুজোর প্রথম বছর প্রতিমা আকারে ছিল ছোট, মাত্র সওয়া হাতের। কিন্তু কালক্রমে পুজোর আড়ম্বরের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিমার আকারও বাড়তে থাকে। বাড়তে বাড়তে এই পুজোর প্রতিমার উচ্চতা ৪৮ ফুটে পৌঁছে গিয়েছিল। যদিও পরে অবশ্য স্থায়ী মন্দির হওয়ায় এখন প্রতিমার উচ্চতা কমিয়ে ৪২ ফুট করা হয়েছে। প্রত্যেক বছর ৪২ ফুটের প্রতিমার আরাধনা করা হয়। এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিমা গড়া হয়। তিন পুরুষ ধরে স্থানীয় পাল পরিবার প্রতিমা গড়ে চলেছেন। ১০০ বাঁশ, এক ক্যুইন্টাল দড়ি ও পেরেক লাগে প্রতিমা নির্মাণে। পুজোয় কোনও বলির প্রচলন নেই। তবে মায়ের কাছে উৎসর্গ করার রেওয়াজ রয়েছে।

পুজোকে কেন্দ্র করে বিপুল সমাগম হয়। মেলা বসে, পুজো চলাকালীন ১৩ দিন ধরে মেলা চলে। বড় কালীর বিসর্জন পর্বও দেখার মতো। পুজো দেখতে শুধু মালদহ নয়, বাংলার নানান প্রান্ত থেকে মানুষ আসেন বুলবুলচন্ডীতে। প্রতিমা নিরঞ্জনেও নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে। পুজোর ১৪ তম দিনে প্রতিমা বিসর্জন করা এখানকার রীতি। কাঠামোর উপর ভর করে বাঁশের উপর দিয়ে গড়িয়ে অভিনব কায়দায় বড়কালীর বিসর্জন করা হয়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen