BJP বার বার ‘ধোঁকা’ দিয়েছে, লোকসভা নির্বাচনের আগে ক্ষোভ বাড়ছে দির্জিলিংয়ে
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ‘গোর্খাল্যান্ড’ ইস্যু দেখিয়ে বারবার পাহাড়ে ভোটে জয় পেয়েছে বিজেপি। কিন্তু পাহাড়ের জন্য কিছুই করেনি পদ্মশিবির। ফলে আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি’র বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুটছে পাহাড়ের মানুষ। হামরো পার্টির প্রধান অজয় এডওয়ার্ডের গলায় এই সুরের প্রতিধ্বনি শোনা গেল।
বর্তমানে পাহাড়ে বিরোধী শক্তিগুলির মধ্যে হামরো পার্টি অন্যতম। কয়েক দিন আগে বিপর্যয়গ্রস্ত কালিম্পংয়ের পুনর্গঠন নিয়ে বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করেন হামরো পার্টির প্রধান। রবিবার দার্জিলিংয়ে গোর্খাল্যান্ড ইস্যু নিয়ে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমন্বয় কমিটি। সভায় জিএনএলএফ, সিপিআরএম, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সহ বিভিন্ন দল হাজির ছিল। সেখানেই বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন হামরো পার্টির প্রধান। সভায় তিনি বলেছেন, গোর্খাদের স্বপ্ন, আমার স্বপ্ন কয়েকবছর আগে বলেছিলেন বিজেপির এক শীর্ষ নেতা। তাই তাঁকে ও বিজেপিকে আমরা অভিভাবক ভেবেছিলাম। কিন্তু, কোনও লাভ হয়নি। ওরা পাহাড়বাসীর স্বপ্নপূরণে নির্বিকার। কাজেই আর ওদের সঙ্গ দেওয়া যাবে না।
অজয় এডওয়ার্ড আরও বলেন, ১৫ বছর ধরে বিজেপিকে বিশ্বাস করছি। আমাদের কাঁধে ভর দিয়েই পাহাড়ে খাতা খুলেছে ওরা। পাহাড়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান, ১১টি জাতিকে এসটি স্বীকৃতি দেওয়া, ন্যূনতম মজুরি চালু করা এই তিনটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি। সেগুলির কোনওটি এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। লোকসভার শীতকালীন অধিবেশনেও বিষয়গুলি নিয়ে চর্চা হবে কি না সন্দেহ। সুতরাং ওদের আর বিশ্বাস করা যায় না। ওরা পাহাড়বাসীকে ধোঁকা দিয়েছে। এজন্য ওদেরকে লোকসভায় ভোট দেওয়া যাবে না। তাই স্থানীয় রাজনৈতিক অবস্থান দূরে সরিয়ে রেখে অনীত থাপার বিজিপিএম সহ সমস্ত দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে লড়াই চালনোর আহ্বান জানিয়েছি।
প্রসঙ্গত, একদা পাহাড়ে বিজেপির শরিক ছিল হামরো পার্টি। এবার তারা একের পর এক ইস্যু নিয়ে আক্রমণ শানায় বিজেপি কার্যত বেকায়দায় পড়েছে বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা। তাদের বক্তব্য, গেরুয়া শিবিরের প্রতি ক্রমশ বেসুর হচ্ছে পাহাড়। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার পর বিজেপির প্রতি মোহভঙ্গ হয়েছে হামরো পার্টির। এর প্রভাব আসন্ন ভোটে পড়বে বলেই মনে হচ্ছে।
দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে স্থানীয়দের বদলে বাইরে থেকে ‘পরিচিত নামে’র প্রার্থী এই আসনে দাঁড় করানো ৮০ দশকের পর থেকে শুরু হয়। ইন্দ্রজিৎ খুল্লার, যশবন্ত সিংহ, সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালি, রাজু বিস্তা শেষ সংযোজন। পাহাড়ের রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ, কিন্তু কেউ কথা রাখে নি! জানা যাচ্ছে বিজেপি’ও পাহারবাসীর এই মনোভাবের কথা বুঝতে পেরে এবার আর রাজু বিস্তাকে প্রার্থী না করার কথা ভাবছে। তাঁরা সম্ভবত দেশের প্রাক্তন শীর্ষ আমলা তথা দেশের প্রাক্তন বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলাকে প্রার্থী করতে চলেছে। কারণ, দার্জিলিঙের আদি বাসিন্দা হিসাবে শ্রীংলার দার্জিলিং পাহাড়ে পরিচিতি রয়েছে। আত্মীয়েরা ছাড়াও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের লোকজনের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে। কিন্তু অজয় এডওয়ার্ডের কথা মতো যদি পাহাড়ের সব রাজনৈতিকগুলো আগামী লোকসভা নির্বাচনে একই ছাতার তলায়া চলে আসে, তাহলে এবার বিজেপি’র পক্ষে পাহাড়ের এই আসনটি ধরে রাখা কঠিন হবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।