মেহগুনি কাঠের প্রতিমা থেকে মুখোশের মণ্ডপ, জগদ্ধাত্রী পুজোয় সেজে উঠছে চন্দননগর

চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোয় জ্বলে উঠেছে আলো, সেজে উঠছে পথঘাট।

November 18, 2023 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোয় জ্বলে উঠেছে আলো, সেজে উঠছে পথঘাট। চন্দননগরের বিভিন্ন স্থানে সেজে উঠেছে মণ্ডপ। ইতিমধ্যে আনা শুরু হয়ে গিয়েছে প্রতিমা। শুক্রবার কলকাতার পোস্তা থেকে চন্দনগরের একাধিক জগদ্ধাত্রী পুজোর ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মণ্ডপ বা শোভাযাত্রার জাঁকজমক শুধু নয়, চন্দননগরে এ বছর জগদ্ধাত্রী পুজোর থিমও চমকে দেবে দর্শনার্থীদের। কোথাও আস্ত মেহগুনি গাছের গুঁড়ি কেটে তৈরি করা হয়েছে প্রতিমা। কোথাও মুখোশের মণ্ডপ। কেউ প্রতিমার চালচিত্র বানিয়ে চমক দিতে চায়।

যুব সম্প্রদায় পরিচালিত বোড় চাঁপাতলা জগদ্ধাত্রী পুজা সমিতির থিম ‘ইতিহাসের ইতিকথা’। কথিত, রাজা কৃষ্ণচন্দ্র কলকাতার জেল থেকে ছাড়া পেয়ে বজরায় বাড়ি ফিরছিলেন। গঙ্গায় দুর্গার বিসর্জন হচ্ছে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে দেবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এবার তোর পুজো করতে পারলাম না মা। সেই রাতে দুর্গা তাঁর স্বপ্নে এসে জগদ্ধাত্রী পুজো করার নির্দেশ দেন। কৃষ্ণচন্দ্রের বন্ধু ছিলেন চন্দনগরের ফরাসি সরকারের দেওয়ান ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী। তিনি পুজোয় সহায়তা করেন। ওই ইতিহাসই তুলে ধরা হয়েছে যুব সম্প্রদায়ের পুজোয়। তৈরি হয়েছে বিশালাকার বজরা। তার চারপাশে ছোট ছোট নৌকা। তাতে বস্তা ভর্তি সামগ্রী বোঝাই। বজরা ও নৌকা দাঁড়িয়ে ফেরিঘাটে জলের উপর। ফেরিঘাটে পাতা কাঠের পাটাতন দিয়ে ঢুকতে হবে বজরার ভিতর। এখানে মেহগনি কাঠের জগদ্ধাত্রী প্রতিমা। তারপর বজরা থেকে নামলে দেখা যাবে চন্দননগরের চিরায়ত জগদ্ধাত্রী মূর্তি।

বোড় তালডাঙা জগদ্ধাত্রী পুজা সমিতির পুজোর থিম ‘অন্তরাল’। মানুষ লক্ষ্যপূরণের জন্য গিরগিটির মতো রং পরিবর্তন করছে। প্রতিটি মানুষ প্রয়োজন অনু্যায়ী মুখোশ পরে ঘুরছে। সেই মুখোশ দিয়েই সাজানো হয়েছে মণ্ডপ। সেখানে ঘুরতে থাকবে বিশালাকার গিরগিটি। জগদ্ধাত্রীর সাবেকি সাজ। আলো দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হবে পশুপাখি। পুজোর সম্পাদক সুচারু কুণ্ডু বলেন, ‘মানুষের মুখোশ সরালে প্রকৃত রূপ দেখা যায়। সেই রূপের খোঁজেই আমাদের থিম, অন্তরাল।’

বোড় পঞ্চাননতলা সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী পুজোর থিম ‘আস্তিক’। ধর্মীয় চেতনার প্রতি আস্থার ছবি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মণ্ডপসজ্জায়। এই মণ্ডপে ঢুকলে দর্শনার্থীদের অন্তরে জেগে উঠবে ভক্তিভাব। পিতলের সামগ্রী দিয়ে মণ্ডপের অন্দরসজ্জা হয়েছে। মণ্ডপের উপরের অংশে রয়েছে বড় আকারের দুটি পদ্ম। তার মাঝে পিতলের বেলপাতা দিয়ে তৈরি মূর্তির মুখাবয়ব। উপর থেকে ঝুলছে প্রজ্জ্বলিত প্রদীপ। দু’দিকের দেওয়াল বরাবর সাজানো পুরাতন দেবীমূর্তি। আধ্যাত্মিক সুর বাজবে সর্বক্ষণ। পুজোর সম্পাদক দেবসদয় কুণ্ডু বলেন, ‘লক্ষ্যপূরণের ইঁদুর দৌড়ে আধ্যাত্মিক চেতনা ভুলতে বসেছি। ধর্মীয় বোধ জাগানোর চেষ্টা থেকেই আমাদের থিম আস্তিক।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen