দেবীর কৃপায় পুত্রসন্তান লাভ, কীভাবে শুরু হয়েছিল শিয়ালডাঙার জগদ্ধাত্রী পুজো?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: উনিশ জন কন্যা সন্তানের পর, মা জগদ্ধাত্রীর আরাধনা করেই এক পুত্র সন্তানের জন্ম। পঞ্চকোট রাজসভার বৈদান্তিক পণ্ডিত হারাধন আচার্য দেবীর কৃপাতেই পুত্র সন্তানের জনক হন। তারপর থেকেই পুরুলিয়ার কাশীপুর ব্লকের মনিহারা গ্রাম পঞ্চায়েতের শিয়ালডাঙা গ্রামে জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু হয়। জেলা ছাড়িয়ে গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে পুজোর খ্যাতি। চলতি বছর সেই পুজো ১৫৩ বছরে পড়ল। পারিবারিক পুজো হলেও, আজ তা সর্বজনীন হয়ে উঠেছে।
পাঁচদিন ধরে পুজো চলে। পুজোর মূল আকর্ষণ হল নবমীর ভোগ, নবমীর দিন গোলাকার একটি উনুনে ২৩টি হাঁড়ি বসিয়ে ভোগ রান্না করা। এবার ভোগ খেয়েছেন প্রায় তিন হাজার মানুষ। মহানবমীর অন্নভোগের প্রস্তুতি অষ্টমীর দিন থেকে শুরু হয়। ভোগে থাকে ভাত, কুমড়োর তরকারি, মুগের ডাল, দেশি মাছের ঝোল এবং চাটনি হয়। হারাধন আচার্যর প্রপিতামহ দীনমণি গঙ্গোপাধ্যায় হুগলির হামাটা থেকে শিয়ালডাঙ্গা গ্রামে এসেছিলেন। তাঁর পাণ্ডিত্যের কারণে কাশীপুরের পঞ্চকোট রাজা তাঁকে আচার্য উপাধিতে ভূষিত করেন। দীনমণির পৌত্র হারাধনের পরপর ১৯টি কন্যাসন্তান হয়, পুত্রসন্তানের আশায় ১৮৭১ সালে হারাধন জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু করেন। দু’বছর পরই তাঁর পুত্রসন্তান হয়। প্রথা মেনে আজও আচার্য বংশের উত্তরসূরিরা পুজো চালিয়ে যাচ্ছেন।
শাক্ত মতে পুজো হয়। একচালা মাতৃ প্রতিমার দুই পাশে থাকেন জয়া ও বিজয়া। ঋষি মার্কণ্ডেয় ও দেবর্ষি নারদ থাকেন সঙ্গে। সবার উপরে থাকে দুই পরী। দেবী এখানে চতুর্ভুজা। সমস্ত নিয়ম মেনেই মায়ের পুজো হয়। এখানে একাদশীতেও পুজো পান দেবী। গ্রামের মানুষ সকলে পুজোয় শামিল হন। গ্রামের মেয়েরা পুজোতে বাপের বাড়ি আসেন। পুজোয় অষ্টমী ও নবমীতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। দশমী ও একাদশীতে দুই দিন ধরে যাত্রাপালা হয়।