উত্তরকাশীতে শ্রমিকদের উদ্ধারের কাজ শুরু হয়েছে সকাল থেকে
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বৃহস্পতিবার রাতে উত্তরকাশীর ভাঙা সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধার করতে গিয়ে আবারও বাধার মুখে পড়তে হয় উদ্ধারকারীদের। আটকে পড়া শ্রমিকদের থেকে কয়েক মিটার দূরত্বেই থমকে যায় উদ্ধারকাজ। যে যন্ত্র দিয়ে সুড়ঙ্গের মাটি কাটা হচ্ছিল তাতে প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দেয় পাশাপাশি, যে কাঠামোর উপর দাঁড় করিয়ে যন্ত্রটিকে চালানো হচ্ছিল তাতেও ফাটল দেখা দেয়। কাজ থামিয়ে দেন উদ্ধারকারীরা। যন্ত্রের মেরামত করে শুক্রবার ভোর থেকে শ্রমিকদের বার করে আনতে আবার উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে।
দীর্ঘ ১২ দিন পর সুড়ঙ্গে আটকদের উদ্ধার শুধু সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করা হচ্ছে।। শ্রমিকরা যেখানে আটকে রয়েছেন, মঙ্গলবার তার প্রায় ৪০ মিটার দূর থেকে এগনোর কাজ শুরু করে মার্কিন ড্রিল মেশিন অগার। সিল্কিয়ারা প্রান্ত থেকে চব্বিশ ঘণ্টারও কম ব্যবধানে ধ্বংসস্তূপ ফুঁড়ে ২৮ মিটারের বেশি এগিয়েছে এই মেশিন। একেবারে নাগালের মধ্যে চলে এসেছেন আটকরা। উত্তরাখণ্ডের সড়ক এবং পরিবহণ দপ্তরের প্রবীণ আধিকারিক মহম্মদ আহমেদ জানান, খনন প্রায় সম্পূর্ণ। আর মাত্র কয়েক মিটার বাকি। কোনও বাধা না পেলে শুক্রবার সকালেই সুড়ঙ্গের বাইরে নিয়ে আসা সম্ভব হবে শ্রমিকদের। তাঁদের জন্য ঘটনাস্থলে বন্দোবস্ত করা হয়েছে অ্যাম্বুলেন্স এবং উদ্ধারকারী বিমান। তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী হাসাপাতালও। ২১ জন এনডিআরএফ কর্মী অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে টানেলে ঢুকেছেন বলে জানা গিয়েছে।
তবে ড্রিলের পর সুড়ঙ্গ সিল করাই গুরুত্বপূর্ণ। সেটা করতেই সময় লেগে যাচ্ছে।’ এই খননের পরই আরও ২১ মিটারের ছ’ইঞ্চি পাইপ এগিয়ে গিয়েছে শ্রমিকদের দিকে। তবে ড্রিলিংয়ের সময় পদে পদে বাধা আসছে বলে আহমেদ জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, বুধবার ভোরে খনন শুরুর পর ধ্বংসস্তূপ থেকে একটি লোহার রড পাওয়া যায়। তবে তাতে কোনও ক্ষতি হয়নি। গত সপ্তাহ থেকেই উদ্ধারকাজে বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে অগারকে। মাঝে একটি বোল্ডার এসে পড়ায় তিনদিন অগারের কাজ বন্ধ করে দিতে হয়। তাছাড়া সুড়ঙ্গের ছাদে ফাটলও দেখা দেয়। তবে উদ্ধারের কাজে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতাও রয়েছে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ভৌগোলিক অবস্থান, ভূমির গঠন সবই প্রতিকূল।
গত ১২ নভেম্বর উত্তরকাশী জেলার ব্রহ্মতাল-যমুনোত্রী জাতীয় সড়কের উপর সিল্কিয়ারা এবং ডন্ডালহগাঁওের মধ্যে নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গের একাংশ ধসে পড়ে। সুড়ঙ্গটি সাড়ে আট মিটার উঁচু এবং প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ। ভাঙা সুড়ঙ্গের ভিতরেই প্রায় ৬০০ মিটার ধ্বংসস্তূপের পিছনে আটকে পড়েন সুড়ঙ্গে কর্মরত ৪১ জন শ্রমিকেরা। সেই ঘটনার ১৩ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। রাজ্য এবং কেন্দ্র— উভয় সরকারই শ্রমিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে যথাসাধ্য চেষ্টা চালাচ্ছে।