পুলিশের যুক্তি উড়িয়ে শহরে ট্রাম চালানোর পক্ষেই মত প্রকাশ করে কলকাতা হাইকোর্ট
নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: কলকাতা পুলিসের শহরের রাস্তায় ট্রাম চালানোর বিরোধিতাকে মান্যতা দিলোনা কলকাতা হাইকোর্ট। ধীরগতির দু-কামরার যান নাকি শহরে ট্র্যাফিক জ্যামের কারণ। এই কারণে দর্শিয়ে শহরে ট্রাম চালানোর বিরোধিতা করেছিল কলকাতা পুলিস। কিন্তু শহরের এই বিলুপ্তপ্রায় ঐতিহ্যকে রক্ষা করতে না পারার জন্য়, রাজ্য এবং ট্রাম কর্তৃপক্ষকে এবার একহাত নিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
গত সোমবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ ট্রাম চালানোর পক্ষেই মত প্রকাশ করেছেন। ট্রাম কর্তৃপক্ষকে হাই কোর্ট প্রশ্ন করেছে, যে তারা কি শুধু ট্রাম বিক্রি করতেই বসে রয়েছেন? কর্মচারীদের বেতন দেওয়া বা কী করে পরিষেবা ফেরানো যায়, সে ব্যাপারে কি কোনও চিন্তাভাবনা নেই তাদের!
ট্রাম চালানোর বিরোধিতা করছে পুলিস, এই মর্মেই হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করেছিলেন এক ব্যক্তি। হাইকোর্ট সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে, পুলিস কোনও ভাবেই এই ট্রাম চালানো বিরোধিতা করতে পারে না। কারণ পুলিসের সেই এক্তিয়ারই নেই। ট্রাম পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্য। ফলে এই বিষয়ে অহেতুক বিতর্ক না বাড়িয়ে তা যথাযথ ভাবে রক্ষা করা এবং পূর্ণ উদ্যমে চালু করার জন্য় গঠনমূলক আলোচনা দরকার।
ট্রামের স্বার্থ রক্ষার্থে হাইকোর্ট ট্রাম সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ কমিটি করেছে। জানা গেছে, পৃথিবীতে ১৫০-র বেশি দেশে ট্রাম চলে।
বেলগাছিয়া ৩৬টি খিদিরপুরে ২০টি ও পার্ক সার্কাসে ২০টি ট্রাম পড়ে রয়েছে। কলকাতাতেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে পুরনো ইলেকট্রিক ট্রাম চালু রয়েছে। ফলে ট্রামকে দ্রুত ইউনেসকোর তকমায় আনার চেষ্টাও চলছে। হাইকোর্টে শীতকালীন ছুটি শেষ হলেই ফের এই বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। রাজ্য়কে এই বিষয়ে রিপোর্ট দিতে হবে।
এই মুহূর্তে কলকাতায় মোট তিনটি রুটে (বালিগঞ্জ-টালিগঞ্জ, ধর্মতলা-শিয়ালদহ, ধর্মতলা-গড়িয়াহাট) ট্রাম চলে। আরও দু’টি রুটে ট্রাম যুক্ত হতে চলেছে। চালু ট্রাম রুটের পাশাপাশি এবার ধর্মতলা থেকে নোনাপুকুর ও ধর্মতলা থেকে খিদিরপুর রুটে ট্রাম চালানোর ভাবনা।