আত্মসমর্পণ করলেন সংসদে ‘হামলা’র মূল চক্রী ললিত ঝা, কী তাঁর পরিচয়?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: দিল্লি পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করলেন সংসদে ‘হামলা’র অন্যতম প্রধান কান্ডারি ললিত ঝা। পুলিশ বুধবার পাঁচজনকে হেফাজতে নিলেও ললিতের নাগাল পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে দেড়দিন পর রাজধানী দিল্লি থেকেই ললিত ঝাকে গ্রেপ্তার করা হল। দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে তিনি নিজেই দিল্লির কর্তব্যপাথ এলাকার থানায় গিয়েছিলেন। এই নিয়ে সংসদ হানার ঘটনায় গ্রেপ্তারির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ছয়।
বুধবার লোকসভার অধিবেশন চলাকালীন দর্শকদের বসার গ্যালারি থেকে আচমকাই নিচে ঝাঁপ দিয়েছিলেন দুই যুবক-যুবতী। জুতোর ভিতর থেকে স্মোক ক্যানিস্টার বের করে হলুদ ধোঁয়ায় গোটা লোকসভা ভরিয়ে দিয়েছিলেন তারা। মুখে ছিল স্লোগান, “তানাশাহী নেহি চলেগা”।
সেই একই সময় অধিবেশন কক্ষের বাইরে থেকেও স্লোগান দিতে দিতে রঙিন গ্যাস স্প্রে করছিলেন আরও কয়েকজন। ললিত ছিলেন তাদের মধ্যেই একজন। এই ঘটনায় মোট ৬ জন জড়িত ছিল বলে জানায় পুলিশ। তাদের মধ্যে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল বুধবারই। তবে পলাতক ছিল ললিত।
সংসদকাণ্ডে নাম জড়িয়েছে ললিতের। আর তার থেকেও বড় কথা হল ললিত থাকতেন এই কলকাতাতেই। ২১৮ রবীন্দ্র সরণির একটা ঘুপচি ঘরের বন্ধ দরজার সামনে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সংবাদমাধ্যমের আনাগোনা। কিন্তু ঘর তো তালাবন্ধ। এখানেই থাকতেন ললিত। দেড় বছর আগে। টিউশন পড়াতেন। ভাই ইলেকট্রিকের কাজ করেন।আর বাবা দেবানন্দ ঝা স্থানীয় মন্দিরে দীর্ঘদিন ধরেই পুজো করেন। গিরিশ পার্কের কাছের ওই ঘরে বাচ্চাদের পড়াত ললিত।
বিহারের দ্বারভাঙার বাসিন্দা ললিত। কোভিডের পর থেকে ওই ঘরে নিয়মিত আসতেন না ললিত। বাসিন্দারা সকলেই জানতেন ওই ঘরে টিউশন পড়াতেন তিনি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সন্ধ্যাবেলার দিকে ছাত্রছাত্রীরা আসত।
একেবারে পুরানো একটি বাড়ি। সেই বাড়ির একতলাতেই ভাড়া নিয়েছিলেন ললিত। সেখানেই থাকতেন। তবে এলাকার লোকজনের সঙ্গে বিশেষ না মিশলেও একেবারে যে অসামাজিক ছিলেন এমনটা নয়। পাড়াল লোকজন তো রীতিমতো প্রশংসা করছেন ললিতের। কম কথা বলতেন। এলাকায় পরিচিত ছিলেন মাস্টারজী বলেই। এলাকার লোকজনের সঙ্গে দেখা হলেই হাত তুলে নমস্কার। আর সেই ললিতই যে সংসদ কাণ্ডে মূল চক্রী এটা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছেন না স্থানীয়রা।
কলকাতায় কোথায় যেতেন ললিত, কাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল সবটাই খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে বলে খবর। তবে আর পাঁচজন বেকার যুবক যেমন থাকেন তার সঙ্গে কোনও ফারাক ছিল না ললিতের। সংসদের ঘটনার সঙ্গে ললিতকে মেলাতে পারছেন না অনেকেই।
এদিকে ঘটনার পরেই কলকাতার অপর এক যুবক নীলাক্ষ আইচ নামে এক কলেজ ছাত্রকে সংসদের বাইরের ঘটনার ভিডিয়ো পাঠান ললিত। নীলাক্ষর দাবি এপ্রিল মাসে সেন্ট্রাল হলে একটি সেমিনারে ললিতের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল নীলাক্ষর। কিন্তু কলকাতার কোথায় থাকেন ললিত সেটা জানতেন না নীলাক্ষ। দাবি করেছেন নীলাক্ষ।