অগ্রহায়ণ সংক্রান্তিতে শুরু হয়ে পৌষ সংক্রান্তি অবধি ছোট মকর চলে জঙ্গলমহলে
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: জঙ্গলমহলে অঘ্রায়ণ মাসের সংক্রান্তিতে ‘ছট মকর’ (ছোট মকর) পালিত হয়। দিনটি চাঁউড়ি(চাউনি) নামেও পরিচিত। বাড়িতে বাড়িতে এই দিন সন্ধ্যেবেলা নানা রকমের পিঠা তৈরি হয়। তার মধ্যে অন্যতম হল ‘পুর পিঠা’। নতুন খেজুর গুড় মাখিয়ে সেই পিঠা সবাই বেশ মজা করে খায়।”
পৌষের সংক্রান্তি ‘বড় মকর’ নামে পরিচিত। কারণ, ওই সময় মহা ধুমধাম করে ‘মকর’ উৎসব পালন করা হয়। তার একমাস আগে অঘ্রায়ণের এই সংক্রান্তি হল ‘ছোট মকর’। পিঠা বানানো ও খাওয়াই হল এই ‘ছোট মকরের’ উৎসব পালন।” জঙ্গলমহলের বেশিরভাগ মানুষই কৃষিজীবী। এই সময় আমন ধান কাটা ও ঘরে তোলার কাজ হয়ে থাকে। কৃষকেরা ধান কাটার সময় যে জমিতে সর্বশেষ ধান কাটে, সেখানে ১১-১৫ গাছির ধান গাছ না কেটে সযত্নে রেখে দেয় ক্ষেত্রলক্ষ্মী স্বরূপ হিসেবে। পরবর্তী সময় জমির ধান ঘরে তোলা হয়ে গেলে ওই দিনটিতে গৃহকর্তা বা কর্ত্রী উপোস থেকে সন্ধ্যার সময় জমিতে ছেড়ে আসা ধানের গাছি শাঁখ বাজিয়ে বাড়ির আঙিনায় যেখানে ধানের গাদা রয়েছে সেখানে নিয়ে এসে আলপনা সহযোগে কাঠের পিঁড়িতে রেখে ক্ষেত্রলক্ষ্মী রূপে পূজা করে। অনেকে আবার জমিতেও পুজো করে বাড়িতে নিয়ে আসে। পরের দিন বিশ্রাম পালন করে। ধান ঝাড়াইয়ের কাজ শেষ হলে ধানের গাছিকে মাচায় তুলে রাখে।
ছোট মকরের দিনটি হল টুসু গানের আনুষ্ঠানিক সূচনার দিন। টুসু ব্রতের সূচনাও হয় এই দিন। এই দিনে কোথাও কোথাও ঘরের কুলুঙ্গিতে একটা ‘সরা’ রাখা হয়। তাতে গোবরের নাড়ু ও পিটুলিগোলা ছিটিয়ে দেওয়া হয়। ছড়িয়ে দেওয়া হয় কিছু গাঁদা ফুল। এটাই হলো টুসুর প্রতীক। কোথাও আবার ঘট পাতা হয়। কোথাও ছোট কুণ্ড তৈরি করে তার মধ্যে গোবর দেওয়া হয় এই দিনে।