জানুন সিলেট কিভাবে পাকিস্তানের অংশ হল

১৯৪৭ সালের ৩রা জুন এক ঘোষণায় মাউন্টব্যাটেন সিলেটের ভবিষ্যৎ নির্ধারনের দায়িত্ব দেন স্থানীয় জনসাধারণের কাঁধে। সিদ্ধান্ত হয় গনভোটের নির্ধারিত হবে সিলেটের ভাগ্য।

August 15, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ ভাগ করে পাকিস্তান ও ভারত নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের সিদ্ধান্ত হলেও, আসামের অংশ সিলেটের ভাগ্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়।  ভারতকে ভাগের দায়িত্ব পড়েছিল লর্ড মাউন্টব্যাটেনের ওপর। ১৯৪৭ সালের ৩রা জুন এক ঘোষণায় মাউন্টব্যাটেন সিলেটের ভবিষ্যৎ নির্ধারনের দায়িত্ব দেন স্থানীয় জনসাধারণের কাঁধে। সিদ্ধান্ত হয় গনভোটের নির্ধারিত হবে সিলেটের ভাগ্য।  

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৯৪৭ সালের ৬ ও ৭ই জুলাই সিলেটে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। মোট ভোটার ছিল ৫ লাখ ৪৬ হাজার ৮১৫ জন। ভোট দিয়েছিল ৭৭ শতাংশ মানুষ। ২৩৯ টি ভোটকেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছিল। ১৯৪৭ সালের ভারত স্বাধীনতা আইনের ধারা ৩ অনুযায়ী সিলেটে গণভোট সংক্রান্ত কার্যক্রমের বৈধতা দেওয়া হয়েছিল।

ভোটে করিমগঞ্জের মানুষও আসাম ছাড়ার রায় দিলেও করিমগঞ্জের কিছু অংশ র‍্যাডক্লিফ লাইনে ভারতের আসামে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

দেশভাগের ইতিহাসে সিলেটের গণভোট এক বিরল ঘটনা। সিলেটের জনগণকে পাকিস্তানের পক্ষে ভোটদিতে নানাভাবে উদ্বুদ্ধ করেছিল মুসলীম লীগ। পাকিস্তানের পক্ষে পড়লো ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬১৯ ভোট আর ভারতে যোগদানের পক্ষে পড়লো ১ লাখ ৮৪ হাজার ৪১ ভোট। মুসলীম লীগ ৫৫ হাজার ৫শ ৭৮ ভোট বেশি।

বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইয়ে উল্লেখ রয়েছে গণভোটের জন্য শেখ মুজিবুর রহমান পাঁচশো কর্মী নিয়ে কলকাতা থেকে সিলেট এসেছিলেন। শেখ মুজিব লিখেছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর অনুরোধে হিন্দু রায়বাহাদুর আরপি সাহা একাধিক লঞ্চ সিলেটে পাঠিয়েছিলেন মুসলীম লীগের পক্ষে। সিলেটে গণভোটে জয়লাভ করে তারা আবার কলকাতা ফিরে যান।

১৯৪৭-এ সিলেটের ঐতিহাসিক গণভোটেই ঠিক হয় পূর্ব পাকিস্তানের একাংশের মানচিত্র। কিন্তু গণভোটের রায় না মেনে মানচিত্রে দাগ কেটে করিমগঞ্জের কিছু অংশ ভারতকে দিয়ে দেওয়ায় সিলেটের মানুষের কাছেও চক্ষুশূল হয়ে যায় র‍্যাডক্লিফ লাইন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen