মোদী আমলে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা শিকেয়, চলছে দেদার আড়িপাতা
নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: ২০২১-র জুলাইয়ে পেগাসাস নিয়ে উত্তাল হয়েছিল দেশ। চলতি বছরে সমানে এসেছে আইফোনে সতর্কবার্তা, করোনা টিকার তথ্য ফাঁসের মতো ঘটনা। মোদী আমলে কার্যত শিকেয় উঠেছে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার সাংবিধানিক অধিকার। লাগাতার গোপনে নজরদারি চলছে। বাদ যাচ্ছেন না কেউই, বিরোধী নেতানেত্রী, থেকে মোদী সরকারের সমালোচক সমাজকর্মী, আইনজীবী, বিচারপতি, সাংবাদিক। টেকনিক্যাল কমিটি অবশ্য পেগাসাস নিয়ে যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে। কেটে গিয়েছে দেড় বছর। কিন্তু আড়িপাতা চলছেই। বৃহস্পতিবার এহেন বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন বিখ্যাত মার্কিন সংবাদপত্র ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’। মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে যৌথভাবে তারা তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
গত অক্টোবর পর্যন্ত ইজরায়েলি স্পাইওয়্যার পেগাসাসের মাধ্যমে মোদী সরকার নজরদারি চালিয়েছে। শোনা যাচ্ছে, এবারের টার্গেট দুই খ্যাতনামা সাংবাদিক। তাঁদের মধ্যে একজন আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অনিয়মের গুরুতর অভিযোগে প্রকাশিত বিস্ফোরক তদন্ত রিপোর্টের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ঘটনাচক্রে অক্টোবরেই বহু বিরোধী নেতা ও মোদী সরকারের সমালোচক হিসেবে পরিচিত সাংবাদিকদের আইফোনে নির্মাতা সংস্থা অ্যাপলের সতর্কবার্তা এসেছিল। দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট-র রিপোর্ট নিয়ে সমাজ মাধ্যমে হইচই শুরু হয়েছে।
অ্যামনেস্টির দাবি, ‘দ্য ওয়্যার’ নিউজ পোর্টালের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক সিদ্ধার্থ বরদারাজন ও ‘দ্য অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড কোরাপশন রিপোর্টিং প্রোজেক্ট’ (ওসিসিআরপি)-এর দক্ষিণ এশিয়ার সম্পাদক আনন্দ মাঙ্গনালের ফোনে আড়ি পেতেছে মোদী সরকার। আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ওসিসিআরপির তদন্তমূলক সাংবাদিকতার ভিত্তিতে তৈরি রিপোর্ট শোরগোল ফেলে দিয়েছিল। চলতি বছরের অক্টোবরে পেগাসাসের মাধ্যমে নতুন করে ওই দুই সাংবাদিকের আইফোনে আড়ি পাতার কথা নিশ্চিত করেছে ফরেন্সিক তদন্ত।
ফোনে আড়ি পাতার ঘটনা মানবাধিকার লঙ্ঘন ছাড়া আর কিছুই নয়। ২০১৪ সালে মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিশ্ব সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান হয়েছে ১৬১ নম্বরে। অ্যামনেস্টির সিকিউরিটি ল্যাবের প্রধান ডোনচা ও সারভাইলের অভিযোগ, মোদী আমলে ভারতে সাংবাদিকদের উপর বেআইনি নজরদারি ক্রমে বেড়েই চলেছে।