গোবর গোহ, বাঙালির জয়গাথার এক রূপকথার নাম
নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন স্কটল্যান্ডের কুস্তিগির জিমি ক্যাম্পবেল, জিমি এসেনের মতো মল্লবীরদের হারিয়ে জগৎজোড়া খ্যাতি পান গোবর গোহ। ১৯২১ সালের ৩০ আগস্ট সান ফ্রানসিস্কোয় লাইট হেভিওয়েট ফ্রিস্টাইল বিভাগের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্যান্টেলকে হারিয়ে বিশ্ব জয়ীর খেতাব জেতেন গোবর গোহ। এক ঘণ্টা তিন মিনিটের সেই লড়াই বাঙালির বিজয়গাথার এক অনন্য উপাদান হয়ে গিয়েছে। তিনি স্বামী বিবেকানন্দরও কুস্তির শিক্ষক ছিলেন।
১৮৯২ সালের ১৩ মার্চ কলকাতার কুস্তিগির পরিবারে জন্মেছিলেন গোবর গোহ। কালো দলাপাকানো চেহারা দেখে বাবা রামচরণ তাঁর নাম রাখেন গোবর। যতীন্দ্রচরণ সেই গোবর নামেই খ্যাতি পেলেন। আখড়ার মাটি তাঁকে সম্মানের মুকুট পরিয়েছিল।
প্যাঁচপয়জার, আখড়ায় গড়াগড়ি খেতে খেতে তিনি লেখেন বাঙালির সম্মানজনক ইতিহাস। গোহ পরিবার আখড়াকে ঈশ্বর জ্ঞানে পুজো করত। আখড়া শারীরিক উপাসনার মন্দির। মনে নেই, জয় বাবা ফেলুনাথের বিশ্বশ্রীকে? কী বলেছিলেন মানিকবাবু সংলাপে? শরীর হল মন্দির। গোবর গোহ-র দেহ সৌষ্ঠব মন্দিরের স্তম্ভের চেয়ে কোনও অংশে কম ছিল না।
মাত্র ন’বছর বয়সে গোবর পিতাকে হারান। কাকার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় গোবর গোহর উত্তরণ ঘটে। প্রখ্যাত মল্লবীর খোসলা চৌবে ও রহমানি পালোয়ান গড়ে তোলেন তাঁকে। ১৯১০ সালে মাত্র আঠারো বছর বয়সে বিদ্যাসাগর স্কুল থেকে এনট্রান্স পাশ করার পর তিনি পেশাদার কুস্তির জগতে প্রবেশ করেন। ত্রিপুরার মহারাজার পালোয়ান নভরং সিং-এর বিরুদ্ধে ছিল প্রথম পেশাদারি লড়াই। একের পর এক দেশ ও দেশের বাইরের মল্লবীরদের হারাতে থাকেন। ভারতীয় কুস্তিকে নতুন দিশা দেখিয়েছিলেন তিনি।
লন্ডন থেকে লড়াইয়ের ডাক আসত তাঁর। ভারতের মল্ল যুদ্ধের ইতিহাসে অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান চলে গিয়েছিলেন আজকের দিনে।