সব পথ মিশছে সাগরের বেলাভূমিতে! গঙ্গাসাগর এখন মিনি ভারতবর্ষ
নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: সব তীর্থ বারবার গঙ্গাসাগর একবার! রবিবার রাত থেকে শুরু মকর সংক্রান্তির পুণ্যস্নান। মানুষের স্রোত বেড়েই চলেছে সাগরতীর্থ গঙ্গাসাগরে। গঙ্গার অবিরাম ধারার মতোই মানুষের স্রোত ধেয়ে চলেছে সাগরতীর্থ অভিমুখে।
গঙ্গাসাগর যেন এখন গোটা দেশের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে। আক্ষরিক অর্থেই মিনি ভারতবর্ষ। উত্তর ও মধ্যভারতের রাজ্যগুলি থেকে দলে দলে মানুষ বাস, ট্রেনে কলকাতায় পৌঁছচ্ছেন। বাবুঘাটে সাগরমেলার ট্রানজিট ক্যাম্পে দু’দণ্ড বিশ্রাম নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন সাগরের উদ্দেশে। বাবুঘাটে জড়ো হওয়া সাধুসন্তরাও রওনা হচ্ছেন একে একে। সব পথ মিশছে গিয়ে সাগরের বেলাভূমিতে।
এই আবহে মুড়িগঙ্গার চরে আটকে গেল পুণ্যার্থী বোঝাই ভেসেল। আতঙ্কিত হয়ে পড়লেন তাঁরা। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধার করল তাঁদের। আর অমাবস্যার ভরা কোটালে প্লাবিত হল স্নানঘাট। এদিকে লট ৮ জেটিঘাট পর্যন্ত কোনও বাধা ছাড়াই পৌঁছে যাচ্ছেন পুণ্যার্থীরা। দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে পরের পথে যেতে। কারণ মুড়িগঙ্গা নদীতে বিদ্যুতের ২ এবং ৩ নম্বর খুঁটির মধ্যে চর দেখা দিয়েছে। আর সেখানেই দু’টি ভেসেল আটকে পড়ে। তার মধ্যে একটি ছিল যাত্রীবোঝাই। অনেকক্ষণ পর জোয়ার এলে গন্তব্যে পৌঁছয় সেই দু’টি ভেসেল। এটাই এখন প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। এছাড়া লট নম্বর আট থেকে আর একটি পুন্যার্থী বোঝাই ভেসেল গঙ্গাসাগরে আসার সময়ই সেটি নদীর চরে আটকে যায়। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, নদীর জল কমে যাওয়ায় চরে আটকে পড়ে ভেসেলটি। এনডিআরএফের কর্মীদের পাঠানো হয়। তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্পিড বোটে করে পুণ্যার্থীদের উদ্ধার করে।
সাগরযাত্রীদের এই ধরনের সমস্যা এড়াতে কেন্দ্রকে মুড়িগঙ্গার উপর একটি সেতু নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কেন্দ্র পুরোপুরি উদাসীন। তাই রাজ্য সরকার নিজেই আরআইডিএফের টাকা থেকে এই সেতু গড়তে পারে কি না, ভাবনা শুরু হয়েছে।
এদিকে তীর্থযাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য আজ, বৃহস্পতিবার থেকেই শুরু হয়েছে সরকারি ও বেসরকারি বাসের বিশেষ পরিষেবা। মেলা উপলক্ষে সরকারি বাসগুলি প্রায় আড়াই হাজার ট্রিপ করবে। বেসরকারি বাসের ক্ষেত্রে সেই সংখ্যা চার হাজার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে বলে বুধবার জানিয়েছেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। হাওড়া স্টেশন ও বাবুঘাট থেকে লট-৮ এবং নামখানা পর্যন্ত বিশেষ বাস পরিষেবা থাকছে।
এ ছাড়া, সাগরমেলার সময়ে ৩২টি ভেসেল, ১০০টি লঞ্চ এবং ছ’টি বার্জ পাঠিয়েছে পরিবহণ দপ্তর। চলবে প্রায় ৭০টি বেসরকারি লঞ্চ-ও। কচুবেড়িয়া থেকে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত পৌঁছতে বেসরকারি বাস এবং প্রি-পেড ট্যাক্সিও থাকছে। ‘অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’ ২১৮টি বাস পাঠাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায়। মেলা চলাকালীন কেউ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে থাকছে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স।