মুখ খুললেন নোবেল জয়ী, মোদি নীতির সমালোচনায় অমর্ত্য
ভারতের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ফের মুখ খুললেন নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বর্ষীয়ান অর্থনীতিবিদ সংখ্যালঘুদের সঙ্গে সরকারের আচরণের তীব্র সমালোচনা করেছেন৷ তুলে ধরেছেন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও করোনা মোকাবিলা নিয়ে তাঁর নিজস্ব মূল্যায়ন৷
অমর্ত্য সেন বলেন, ‘স্বাধীনতার পর আমাদের শুরুটা হয়েছিল একটা গণতান্ত্রিক সমাজ হিসেবে। কিন্তু সেই গণতন্ত্রের অবস্থা খারাপ থেকে আরও খারাপ হচ্ছে। বর্তমান সময়ে সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক কিছু বললেই হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। এমনকি জেলে যাওয়ার সম্ভাবনাও অনেকাংশে থেকে যায়।‘
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যে অনেকাংশে বেড়ে গিয়েছে, এটা অস্বীকার করা উচিত হবে না। যদিও অর্থনৈতিক বৃদ্ধির ফলে যে সম্পদ তৈরি হয়েছে, দারিদ্র্য দূরীকরণের ক্ষেত্রে তা অনেকাংশে ব্যবহার করা যেত বলে মনে করি। কিন্তু আদতে তাঁর সঠিক ব্যবহার হচ্ছে না।‘
তবে দারিদ্রতা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রসঙ্গে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ জানান, এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে গণতন্ত্রের সঠিক প্রয়োগের উপর। যদি যথেষ্ট স্কুলে শিক্ষার ব্যবস্থা না থেকে থাকে, যদি স্কুলের সার্বিক মান খারাপ হয়, ন্যূনতম স্বাস্থ্য পরিষেবা না থাকে, তাহলে সার্বিক উন্নয়ন কী করে সম্ভব? তাঁর অভিযোগ, বর্তমানে স্বাস্থ্য সুবিধা শুধুই ধনীদের জন্য বরাদ্দ।
অমর্ত্য সেন বলেন, ‘এখন আমরা দুর্ভাগা রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছি। যেখানে ভারতের বুদ্ধিজীবীদের বড় অংশ, যাঁরা ভুল ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন, তাঁদের তা করতে দেওয়া হচ্ছে না। কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। সরকারের বিরোধিতা করা হলে বিভিন্ন অজুহাতে অনেককে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে।‘
শেষে তিনি বাবরি মসজিদ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভাবাবেগে আঘাত হানা ছাড়া আর কিছুই নয়। হিন্দুরা যেমন এদেশের নাগরিক, মুসলিমরা ঠিক ততটাই। সেজন্য আমরা বারবার মহাত্মা গান্ধী, জহরলাল নেহেরু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো মানুষদের প্রসঙ্গ টেনে আনি। কিন্তু এখন যে ন্যায় নীতি ব্যবহার করা হচ্ছে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এর পরিণতি মারাত্মক।‘