সারেগামাপা-র সঞ্চালক, টেলিতে প্রত্যাবর্তন আবিরের
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ছোটপর্দার কিছু কিছু অনুষ্ঠানের সঙ্গে দর্শকদের এক প্রকার আত্মীয়তার সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায়। এক সঙ্গে হাসি-কান্না বা উত্তেজনা-উৎকণ্ঠার দৈনন্দিন আখ্যান কখন যেন অজান্তেই হয়ে ওঠে একান্তই তাঁদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা। কিন্তু সময়ের সঙ্গে অনেক কিছুই বদলায়। মানিয়ে নিতে হয় প্রত্যেককেই। যেমন দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে বড়সড় পরিবর্তনের সাক্ষী হতে চলেছে জি বাংলার জনপ্রিয় সঙ্গীত রিয়েলিটি শো ‘সারেগামাপা’। শোয়ের সঞ্চালনার দায়িত্ব আর পালন করবেন না যিশু সেনগুপ্ত। তাঁর পরিবর্তে এই বছর সঞ্চালনার গুরুদায়িত্ব চলে যাচ্ছে আবির চট্টোপাধ্যায়ের কাঁধে। অনেকের কাছেই এই খবর রীতিমতো চমকপ্রদ। সূত্রের খবর, লকডাউনের মধ্যেই আবিরের কাছে চ্যানেলের তরফে প্রস্তাব গিয়েছিল। তারপর আলোচনার মাধ্যমে অবশেষে নতুন সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়তে আর বেশি সময় খরচ হয়নি।
নতুন ইনিংস শুরুর প্রতিক্রিয়া জানতে সোমবার সকালে আবিরকে ফোনে পাওয়া গেল। কেন রাজি হলেন তিনি? ‘প্রথমত, এই শোটা বাংলা বিনোদন জগতে নিজের একটা আলাদা জায়গা তৈরি করে নিয়েছে। তার থেকেও বড় কথা এই শো থেকে প্রচুর নতুন প্রতিভা উঠে এসেছেন। দ্বিতীয়ত, একজন অভিনেতা হিসেবে আমি সবসময়েই চেষ্টা করি নতুন কিছু করার। টিভির একটা আলাদা দর্শক রয়েছেন, যাঁদের কাছে এই শোয়ের মাধ্যমে পৌঁছে যাওয়ার সুযোগটাও হাতছাড়া করতে চাইনি,’ দীর্ঘ উত্তর অভিনেতার। আবির চট্টোপাধ্যায় ব্যস্ত অভিনেতা। আর রিয়েলিটি শোয়ের শ্যুটিং শিডিউলও বেশ চাপের। এই প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘করোনা পরিস্থিতির জেরে ছবির শ্যুটিংয়ের চাপ কম। সিনেমা হল কবে খুলবে কেউ জানে না। ফলে সময় বের করাটা মনে হয় না কষ্টকর হবে।’
এর আগে অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করলেও, এই প্রথম কোনও নন-ফিকশনের সঙ্গে জড়াতে চলেছে আবিরের নাম। তাও আবার সঞ্চালনার ভার। তাই নিজের মতো করে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন তিনি। বলছিলেন, ‘এটা আমার কাছে ডেব্যু। অনেক বছর পর নিজেকে আবার নিউকামার বলে মনে হচ্ছে। সারেগামাপা জনপ্রিয় শো বলে মাঝে মধ্যে দেখতাম। এখন তৈরি হওয়ার জন্য কিছু কিছু ফুটেজ দেখছি। আর ওদের ক্রিয়েটিভ টিম এতটাই ভালো যে, মনে হয় না কোনও অসুবিধা হবে। তবে এবারে শোটাকে আরও নতুনভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’ একটা সময়ে সারেগামা ও যিশুর নাম প্রায় সমার্থক হয়ে গিয়েছিল। সেই জুতোয় পা গলানো কি খুব কষ্টকর নয়? ‘যিশু দীর্ঘ দিন ধরে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে এই অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছে। গানের বাইরে প্রতিযোগীদের সঙ্গে যিশুর মজা করা বা ওর দৌলতে তৈরি অসংখ্য স্মরণীয় মুহূর্ত দর্শকদের কাছে ছিল বাড়তি পাওনা। মঞ্চে একসঙ্গে সঞ্চালনা করার সময়েও দেখেছি ও অসাধারণ। তাই আমি সবসময় ওর থেকে শেখার চেষ্টা করি,’ স্পষ্ট জবাব আবিরের। এই নতুন ভূমিকা নিয়ে যিশুর সঙ্গে আবিরের একপ্রস্থ কথাও হয়েছে। হাসতে হাসতে তিনি বলছিলেন ‘আমি ওকে বলেও রেখেছি যে, ওর থেকে টিপস নেব। আর তুলনা করা বা না করাটা আমার হাতে নেই। ওটা দর্শকদের হাতে ছেড়ে দিলাম।’ অর্থাৎ পর্দার ‘ব্যোমকেশ’-এর মতোই এবারেও নিজস্ব মুনশিয়ানায় দু’জনের মধ্যে দর্শকদের মনে কে জায়গা করে নেবেন, সেটাই দেখার অপেক্ষা। সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে ‘সারেগামাপা ২০২০’-এর শ্যুটিং।