ছাড়পত্র পেল না ইস্ট-ওয়েস্ট ও মাঝেরহাট মেট্রো, কেন জানেন?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: চিফ কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটির ছাড়পত্র মিলল না। তাই এখনই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো করিডরের হাওড়া ময়দান-এসপ্ল্যানেড অংশে বাণিজ্যিক পরিষেবা শুরু হচ্ছে না। একইভাবে জোকা-এসপ্ল্যানেড মেট্রো করিডরের মাঝেরহাট স্টেশনে বাণিজ্যিক পরিষেবা শুরু করার জন্য আরও কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে।
গত রবিবার থেকে মঙ্গলবারের মধ্যে কলকাতা মেট্রোর তিনটি লাইনের চূড়ান্ত পরিদর্শন সারেন চিফ কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি। সেই পরিদর্শনের পর বৃহস্পতিবারই বাণিজ্যিক পরিষেবা শুরু করার অনুমোদন পেয়ে গিয়েছে নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রো করিডরের নিউ গড়িয়া থেকে রুবি পর্যন্ত অংশ। কিন্তু সেই সৌভাগ্য হয়নি ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো করিডরের হাওড়া ময়দান-এসপ্ল্যানেড অংশ এবং জোকা-এসপ্ল্যানেড মেট্রো করিডরের মাঝেরহাট স্টেশনের।
সোম থেকে বুধবার টানা তিনদিন ধরে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পশ্চিমদিকের ওই অংশে যাত্রী পরিষেবা শুরুর লক্ষ্যে পরিদর্শন সেরেছেন সিসিআরএস। অথচ পরিদর্শন চলাকালীন খোদ সিসিআরএস’র মোবাইল কার্যত অচল রইল। কারণ, হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেডের মধ্যে টানেল ও স্টেশনে মোবাইলের টাওয়ার থাকছে না। নতুন এই মেট্রোপথের যাবতীয় খুঁটিনাটি পরীক্ষার সময় জনককুমার গর্গ ‘নট রিচেবল’ থেকে গেলেন। সূত্রের দাবি, পরিদর্শনের সময় রেলের শীর্ষকর্তারা ওয়াকিটকি নিয়ে যোগাযোগ রেখেছিলেন। কিন্তু মোবাইল কার্যত ‘ডেড’ ছিল। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সার্বিক পরিকাঠামো ও যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়ে মোটের উপর সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সিসিআরএস। কিন্তু এই রুটে অবিলম্বে মোবাইল ফোনকে ‘জীবন্ত’ করে তোলার নির্দেশ দিয়েছেন অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের ওই শীর্ষ কর্তা।
মেট্রো সূত্রের খবর, পাতাল পথের এই অংশে মোবাইলে যোগাযোগ করা যায় না। গত কয়েক বছর ধরে ওয়াকিটকির মাধ্যমেই নির্মাণ শ্রমিক কিংবা কর্তারা মাটির নীচে নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলেন। মোবাইল ফোন চালুর জন্য বিশেষ ধরনের রাউটার এই মেট্রো পথে বসানো একান্ত আবশ্যক। সেই লক্ষ্যে একটি বেসরকারি টেলিকম সংস্থাকে টেন্ডার করে নির্বাচন করে রেখেছে রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড (আরভিএনএল)। কিন্তু সেই কাজ এখনও অসম্পূর্ণ থেকে গিয়েছে। তাই সিসিআরএস’র ফোন কাজ করেনি। পরিদর্শন শেষে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে কয়েকটি বিষয়ে নিজের পর্যবেক্ষণ লিখিত আকারে জানাবেন সিসিআরএস। তার মধ্যে অবিলম্বে রাউটার বসিয়ে টানেল ও স্টেশনগুলিতে টেলি-যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার বিষয়টি থাকবে বলে মনে করছেন রেল কর্তারা।
মেট্রো সূত্রের খবর, হাওড়া ময়দান-এসপ্ল্যানেড অংশে পরিদর্শনের কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন চিফ কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি। হাওড়া রেলওয়ে স্টেশন এবং হাওড়া মেট্রো স্টেশনের মধ্যে যাত্রীরা যাতে সহজে যাতায়াত করতে পারেন, সেজন্য পর্যাপ্ত দিকনির্দেশক বসাতে বলেছেন তিনি। বিশেষভাবে সক্ষম যাত্রীদের জন্য যাত্রাপথের চারটি স্টেশনেই (হাওড়া ময়দান, হাওড়া, মহাকরণ এবং এসপ্ল্যানেড) প্রয়োজনীয় নির্দেশক বসানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
মাঝেরহাট মেট্রো স্টেশনের ক্ষেত্রেও একইরকম কয়েকটি সুপারিশ করেছেন চিফ কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি। কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, চিফ কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটির পরামর্শ মতো পদক্ষেপ করা হবে। দ্রুত শেষ করা হবে সেইসব কাজ। তারপর চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার জন্য আবেদন করা হবে চিফ কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটির কাছে। তাঁর অনুমোদন পেলেই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো করিডরের হাওড়া ময়দান-এসপ্ল্যানেড অংশ এবং জোকা-এসপ্ল্যানেড মেট্রো করিডরের মাঝেরহাটে পরিষেবা শুরু করা হবে।