রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

রবীন্দ্র ঐতিহ্য রক্ষা করতে গুণ্ডা অপবাদও সইতে রাজি: মমতা

August 20, 2020 | 2 min read

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

রবীন্দ্রনাথের আদর্শ এবং শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্য রক্ষার জন্য ‘গুন্ডা’ অপবাদ মাথায় নিতে তিনি ও তাঁর দল পিছপা হবেন না বলে জানিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেলার মাঠ পাঁচিল দিয়ে ঘেরার বিরুদ্ধে শান্তিনিকেতনে গত কয়েকদিন ধরে যে তীব্র প্রতিবাদ আন্দোলন চলছে, বুধবার তা নিয়ে বিশদ প্রতিক্রিয়া জানান মমতা। তাঁর স্পষ্ট ঘোষণা, ‘‘রবীন্দ্র-ঐতিহ্য রক্ষার দাবিতে সেখানে যে গণআন্দোলন সংগঠিত হয়েছে দলীয় পতাকা না নিয়ে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা তার পাশে থাকবে।’’

বিশ্বভারতীর মুক্ত চিন্তার পরিবেশ ‘নষ্ট’ করে মেলার মাঠ ও আশ্রম এলাকার বিভিন্ন জায়গা পাঁচিল দিয়ে ঘেরার যে চেষ্টা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ করছেন তার পিছনে কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপির ‘প্রত্যক্ষ মদত’ আছে বলে মনে করে তৃণমূল। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনেও মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, তিনি পাঁচিল দিয়ে ঘেরা সমর্থন করেন না। এ দিন অবস্থান আরও স্পষ্ট করে মমতার বক্তব্য,  বিশ্বভারতীর ঐতিহ্য ধ্বংসের বিরুদ্ধে আন্দোলন থেকে তাঁর দল সরবে না।

সমস্যা মোকাবিলায় সকল পক্ষকে নিয়ে প্রশাসন এ দিন যে সালিশি বৈঠক ডেকেছিল, বিশ্বভারতী তাতে যোগ দেয়নি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, ‘‘গুন্ডা-মাফিয়ার সঙ্গে কোন ভদ্রলোক মিটিং করতে পারেন? সালিশি সভায় ডেকে বাম আমলেও গণপিটুনি দিয়ে খুন করা হয়েছে। তৃণমূলের আমলেও সালিশি সভায় ডেকে আমাদের কর্মীদের খুন করা হয়েছে। উপাচার্য সুরক্ষিত নন। তাই যাননি।’’

মমতা অবশ্য এই ধরনের মন্তব্য প্রতিক্রিয়াযোগ্য বলে মনেই করেন না। তাঁর কথা, ‘‘আমি স্পষ্ট বলতে চাই, রবীন্দ্রনাথের মুক্তচিন্তা, মুক্তশিক্ষার পীঠস্থান শান্তিনিকেতন শুধু আমাদের নয়, সারা বিশ্বের গর্ব। তার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি যারা ধ্বংস করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিবাদ স্বাভাবিক। সেই প্রতিবাদের পাশে থাকার জন্য আমাদের কেউ গুন্ডা বললেও পরোয়া করি না।’’
অমর্ত্য সেন থেকে শুরু করে শান্তিনিকেতনের প্রবীণ ও বিশিষ্ট বহু প্রাক্তনী, আশ্রমিক এবং স্থানীয় সাধারণ মানুষ ইতিমধ্যেই আশ্রম চত্বর পাঁচিল দিয়ে ঘেরার বিরুদ্ধে দৃঢ়মত ব্যক্ত করেছেন। মমতা এ দিন বলেন, ‘‘সকলের সব অভিমত ও প্রতিবাদ অগ্রাহ্য করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ কার্যত রবীন্দ্রনাথের ভাবনা, চিন্তা ও আদর্শকেই পিষে ফেলতে চাইছেন।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘দেশের যে শাসকেরা এখন ভারতের ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়া বা বিকৃত করার খেলায় মেতেছেন, এখানেও তাঁদেরই হাতের ছাপ লক্ষ্য করছি। রবীন্দ্রনাথ নিজেই ভয়শূন্য চিত্ত ও উচ্চশিরের কথা বলে বলেছেন। লিখেছেন, ‘জ্ঞান যেথা মুক্ত,  যেথা গৃহের প্রাচীর আপন প্রাঙ্গণতলে দিবসশর্বরী বসুধারে রাখে নাই খণ্ড ক্ষুদ্র করি।’ দুর্ভাগ্য বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ঠিক বিপরীত পথে চলেছেন।’’
শান্তিনিকেতনের আন্দোলনকে গণপ্রতিবাদের জায়গায় নিয়ে যেতে তৃণমূল যে প্রস্তুত সেই বার্তা দিয়ে মমতার মন্তব্য, ‘‘প্রকৃতি কারও ‘বন্ডেড লেবার’ নয়। আঘাত এলে প্রকৃতি নিজেই প্রতিশোধ নেয়। কখনও প্রাকৃতিক ভাবে, কখনও মানুষের বিক্ষোভ-প্রতিবাদের মাধ্যমে।’’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Visva Bharati, #Rabindranath Tagore, #Mamata Banerjee, #tradition

আরো দেখুন