আবাসনের অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের সাহায্যে ডাইরেক্টরি প্রকাশ কলকাতা পুরভবনে
বিভিন্ন পুর অঞ্চলে আবাসনে বসবাসকারী একাকী বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের সাহায্যে এবার বিশেষ ডাইরেক্টরি প্রকাশিত হল। বিভিন্ন হাউসিং সোসাইটি এবং প্রশাসনের সাহায্যে কলকাতা, নিউটাউন, বিধাননগর এবং হাওড়া— এই চার এলাকার বহুতল আবাসনের পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য দিয়ে বুধবার চারটি বইয়ের উদ্বোধন হল কলকাতা পুরভবনে। তাতে করোনা নিয়ে পুরসভা এবং রাজ্য সরকারের নানা হেল্প লাইন নম্বর দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, এদিন এক ধাক্কায় অনেকটাই কমে গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন হল কলকাতার কন্টেইনমেন্ট জোন বা সংক্রমিত এলাকার সংখ্যা। ২৯টি থেকে কমে তা হল ২০টি।
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুরমন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম, রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, এন কে ডি এ চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন, কলকাতার পুলিস কমিশনার অনুজ শর্মা, কলকাতা পুর-কমিশনার বিনোদ কুমার সহ হাওড়া, বিধাননগর এবং নিউটাউনের প্রশাসকরা। উল্লেখ্য, সম্প্রতি বিভিন্ন বহুতল আবাসনে বা ফ্ল্যাটে থাকা একাকী বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের সাহায্যের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনকে উদ্যোগী হতে বলেছিলেন। সেই মতো বিভিন্ন পুর অঞ্চলে কত অসহায় প্রবীণ রয়েছেন, তার তালিকা তৈরি করা হয়। সমীক্ষা চালাতে সাহায্য করেছে হাউসিং সোসাইটিগুলি। তারপরে এদিন এই চারটি বই প্রকাশ করা হয়েছে। করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য হেল্পলাইন নম্বরের পাশাপাশি টেলিমেডিসিনের নম্বর, এবং বিভিন্ন আবাসন কমিটির কর্তাদের নম্বর দেওয়া হয়েছে। যাতে এই ধরনের একাকী বয়স্ক লোকেরা সমস্যায় পড়লে সরাসরি হাউসিং সোসাইটির মাধ্যমে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। প্রশাসনও নিয়মিত তাঁদের খোঁজখবর রাখতে পারবে।
ফিরহাদ হাকিম বলেন, এক্ষেত্রে সরাসরি আমরা যোগাযোগ রাখতে পারব। ওই বয়স্করা যেন নিজেদের একা মনে না করেন। সরকার সরাসরি যে কোনও প্রয়োজনে তাঁদের পাশে দাঁড়াবে। তিনি জানিয়েছেন, বহুতল আবাসনের বিল্ডিংয়ে একটি করে পোস্টার লাগানো হচ্ছে। সেখানে সরকারি বিভিন্ন হেল্প লাইনের নম্বর ছাড়াও আমার মোবাইল নম্বর দেওয়া থাকছে। যে কোনও প্রয়োজনে সেখানে যোগাযোগ করা যেতে পারে। তাঁদের এক ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।
স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিভিন্ন পুর এলাকায় পুলিস বয়স্ক লোকদের জন্য নানা প্রোগ্রাম চালায়। কিন্তু এতটা সুসংহত তালিকা ছিল না। এই ডাইরেক্টরির মাধ্যমে প্রবীণ নাগরিকদের সঙ্গে প্রশাসনের সেতুবন্ধন সম্ভব হল। অন্যদিকে, এদিন সেফ হোমেও জায়গার অভাব নেই বলেও আশ্বস্ত করেছেন পুরমন্ত্রী। তিনি বলেন, খোদ কলকাতা পুরসভার হাতে থাকা বিভিন্ন সেফ হোমে প্রায় হাজারের কাছাকাছি শয্যা খালি রয়েছে। কারণ হিসেবে তাঁর ব্যাখ্যা, মূলত বস্তি অঞ্চলে কিংবা নিম্ন মধ্যবিত্ত লোকেরাই সেফ হোমে ভর্তি হন। বর্তমানে বস্তি অঞ্চলে সংক্রমণ ১৫ শতাংশের নীচে নেমে এসেছে। ফলে খালি পড়ে থাকছে সেফ হোমের শয্যা। তাই, সরকারি হেল্পলাইনে ফোন করলে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা পরিষেবার ক্ষেত্রে কোনও ধরনের খামতি থাকবে না বলেই আশ্বস্ত করেছেন তিনি।