ঘুরে আসুন ইতিহাসের শহর মালদা থেকে
পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম প্রাচীন শহর মালদায় নবাবি আমলের প্রাচীন মসজিদ, প্রাচীন মন্দির, আম, লিচু, লোক সংগীত, বিখ্যাত গম্ভীরা, ইতিহাস, সবটাই রয়েছে। চৈতন্যদেবেরও পদস্পর্শধন্য এই শহর। শহরটির ইতিহাসের সাথে জড়িয়ে রয়েছে বাংলার গর্বের দুই প্রাচীন শহর গৌড় ও পান্ডুয়া।
অল্প সময়ের ছুটিতে ঘুরে আসুন আমের শহর, ইতিহাসের শহর মালদা থেকে। দিন তিনেকের ছুটি পেলেই হবে। থাকার জন্য ছোট, বড়, মাঝারি হোটেল আছে। বর্ষায় তো বটেই অন্য সময়েও পদ্মার টাটকা ইলিশের স্বাদও নিতে পারবেন এখানে। পাবেন মনের মতো খাবার।
গৌড়ে ঢোকার মুখেই রয়েছে রামকেলি মন্দির। মালদা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এটি। হিন্দুদের বিখ্যাত ধর্মীয় গুরু শ্রী চৈতন্যদেবের অস্থায়ী বাসস্থান ছিল এই রামকেলি। এখানে কেলিকদম্ব বৃক্ষের নীচে ফুল ও চন্দন চর্চিত শ্রীচৈতন্যদেবের পায়ের ছাপ এখনও রয়েছে।
রামকেলির পর বারোদুয়ারি বা বড় সোনা মসজিদে না গেলে গৌড় ঘোরা অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে। নাম বারোদুয়ারি, কিন্তু দরজা আছে এগারোটি। সুলতান নূসরত শাহ ১৫২৬ সালে এই মসজিদ নির্মাণ করেন। গৌড়ের সবচেয়ে বড় মসজিদ এটি। মসজিদের দেওয়ালের ভাস্কর্যে গ্রিক ও আরবী সংস্কৃতির সংমিশ্রণ লক্ষ্য করা যায়।
দাখিল দরওয়াজার এক কিলোমিটার দূরে রয়েছে ফিরোজ মিনার। আরেক নাম পীর আশা মিনার। অনুমান করা হয়, ১৪৮৫-৮৯ সালের মধ্যে সুলতান সাইফুদ্দিন ফিরোজ শাহ্ মসজিদটি তৈরি করেন। এই মিনারের গায়ে ফিরোজা রঙের টাইলস লাগানো ছিল। মিনারটিতে এক অনবদ্য শৈল্পিক টেরাকোটায় ভরা তুঘলকি স্থাপত্যের নিদর্শন পাওয়া যায়।
মালদা অঞ্চলের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে আদিনা মসজিদ অন্যতম। সিরিয়ার উমাইয়া মসজিদের আদলে তৈরি মসজিদটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম মসজিদ। আনুমানিক ১৩৬৩ সালে সুলতান সিকান্দার শাহ মসজিদটি তৈরি করেন। দোতলায় রয়েছে মেয়েদের নামাজ পড়ার জায়গা। মসজিদের চারদিকে ঘিরে ছিল অতিথিদের থাকার জায়গা। আদিনা মসজিদের পাশেই রয়েছে সুলতান সিকান্দার শাহের সমাধি। সমাধিটিতে টেরাকোটা ও ইটের সূক্ষ কারুকাজ সত্যিই অতুলনীয়।
আদিনা যাবার পথে রয়েছে ‘ডিয়ার পার্ক’। এখানে হরিণ ও নীলগাই দেখতে পাবেন। পার্কটিতে প্রাণী প্রজনন কেন্দ্র ছাড়াও সেখানে বেশ কয়েকটি বাগানে পাখিদের অভয়াশ্রম করা হয়েছে। একবার অবশ্যই ঘুরে আসুন এই ইতিহাসের শহরে।
কিভাবে যাবেন
শিয়ালদা- হাওড়া থেকে অনেক ট্রেন মালদা যায়। এছাড়াও ধর্মতলা থেকে মালদাগামী যেকনো বাসেই উঠে পড়তে পারেন।