‘পায়ের তলায় মাটি সরে যাওয়ার ফল’ আহত মুখ্যমন্ত্রীকে শুভেন্দুর কটাক্ষের কড়া প্রতিক্রিয়া তৃণমূলের
নিজস্ব সংবাদদাতা, দৃষ্টিভঙ্গি: গত ১৪ই মার্চ সন্ধ্যায় কালীঘাটের বাসভবনে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখম হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতার আরোগ্য কামনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী থেকে দেশের তাবড় নেতারা। কিন্তু বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাঁকে কুৎসীত অঙ্গভঙ্গীর মাধ্যমে কটাক্ষ করেন।
শুক্রবার ভোটের প্রচারে কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত খেজুরিতে একটি জনসভায় যোগ দেন শুভেন্দু। সেই কেন্দ্রে এ বার বিজেপি প্রার্থী করেছে শুভেন্দুর ভাই সৌমেন্দু অধিকারীকে। তাঁর সমর্থনে আয়োজিত এক জনসভা থেকে শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়, ‘‘মাথা ঘুরছে, লো প্রেসার, ধপ ধপ করে পড়ে যাচ্ছে। পড়া শুরু হয়েছে উপর থেকে, নীচ অবধিও পড়া শুরু হবে।’’ এই নিয়ে আজ তৃনমূল কংগ্রেসে পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন কুনাল ঘোষ বলেন যে, “সারা দেশ যেখানে আরোগ্য কামনা করছে সেখানে শারীরিক অঙ্গভঙ্গী করে যে মুখের ভাষা প্রয়োগ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আচমকা পড়ে গিয়ে আঘাত প্রাপ্তকে কটাক্ষ করলেন তা রুচী বিরোধী।”
তিনি আরও বলেছেন যে, বিজেপির দিনেশ লাল কটাক্ষ করছেন এটা বিজেপির সংস্কৃতি। দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। শুভেন্দু যাঁকে ‘যজশ্বী প্রধামন্ত্রী’ বলেন সেই তিনিও আরোগ্য কামনা করছেন সেখানে শুভেন্দু অপমান করছেন। এটা তৃণমূল পরিবার চূড়ান্তভাবে নিন্দা করছে। যে খেজুরিতে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেছেন সেখানেই তৃণমূল প্রতিবাদ করবে। আমরা মানুষকে বলব।”
আহত মুখ্যমন্ত্রীকে শুভেন্দুর কেন এই আক্রমণ?
খুব স্পষ্ট করে কুনাল ঘোষ জানান যে, ‘’পায়ের তলার মাটি সরে যাওয়ার ফলে এইভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ।’ তিনি সরাসরি শুভেন্দুর নামে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, “যে নেত্রী এবং দলের দয়ায় তাঁর বাবা কেন্ত্রীয় মন্ত্রী ভাইরা কেউ সাংসদ, এম এল এ। যে তৃণমূল কর্মীদের আবেগ রক্তের বদলে তোমরা এই জায়গায়।”
বয়স নিয়ে বিজেপির কটাক্ষের জবাব
বয়স নিয়ে কটাক্ষ করবেন না। এই বয়সে তিনি যে সক্রিয়, গতিশীল আপনার দলে কজন আছেন। তিনি এভারগ্রিন। গন আন্দোলন থেকে উঠে আসা নেত্রী। গতকাল দিব্যেন্দু অধিকারী বিজেপিতে গিয়েছেন। আর বিজেপি পরিবারবাদ নিয়ে কথা বলবেন? এই শুভেন্দু অধিকারী একসময় বিজেপিকে চোর বলতো। এফ আইআর নেমড শুভেন্দু। শুভেন্দু ও তার পরিবারকে রাজনৈতিক স্বীকৃতি দিয়েছে যিনি, তাঁর বিরুদ্ধে, এই ভাষা। খেজুরির মানুষ পূর্ব মেদিনীপুরের মানুষ এই জবাব কড়ায় গন্ডায় দেবে।
বিজেপির মিথ্যাচার প্রসঙ্গে
আবাস যোজনা এবং ১০০ দিনের কাজের মতো প্রকল্প নিয়ে বিজেপির মিথ্যাচার নিয়ে আজও সরব হয় তৃণমূল। এ বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার বিজেপিকে ওপেন চ্যালেঞ্জ করে শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে বলেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করে লিখেছিলেন, ‘‘মিথ্যাচার করার জন্য কেন্দ্রের বিজেপি সরকার জনগণের টাকা নষ্ট করছে। আমি বিজেপি নেতৃত্বকে আমার সঙ্গে মুখোমুখি তর্কে বসার চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি। ২০২১ সালে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকে আবাস যোজনা এবং ১০০ দিনের কাজের মতো প্রকল্পগুলিতে ১ পয়সাও বরাদ্দ করেনি কেন্দ্র। আমি যে ভুল তা প্রমাণ করার জন্য বিজেপিকে শ্বেতপত্র প্রকাশ করার চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি।’’ এই নিয়ে কুনাল ঘোষের সঙযোজন, “অভিষেক ব্যানার্জীর সেই চ্যালেঞ্জ বিজেপি নিতে পারছে না। পালিয়ে যাচ্ছে।”