রাজ্যের পাট শিল্পের সমস্যা লোকসভা নির্বাচনে ডিভিডেন্ট দিতে পারে তৃণমূলকে, কেন?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: দেশের পাট শিল্পকে লাটে তুলে প্লাস্টিক লবি চালানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মোদী সরকার, বিরোধীরা এই অভিযোগ দীর্ঘ সময় ধরেই করে আসছে। পাটের ক্ষেত্রে নুন্যতম সাহায়ক মূল্য ঘোষণা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ও নেপাল থেকে অবৈধভাবে পাট সরবরাহ হচ্ছে। যে কারণে দিনে দিনে ধ্বংসের মুখে ভারতের ঐতিহ্যশালী এই শিল্প।
নিজেই প্লাস্টিক পণ্য বর্জনের ডাক দিলেও সেকথা বাস্তবায়িত করতে পারেননি নরেন্দ্র মোদী। ২০১৪ সালে মোদী দিল্লিরে ক্ষমতায় আসার পরে ঠিক এভাবেই ‘স্বচ্ছ ভারত’ প্রকল্পের সূচনা করেন। তবে সেকথা মুখেই রয়ে গিয়েছে। বাস্তবে তার কোনও প্রতিফলনই চোখে পড়েনি দেশবাসীর। পরিবেশের ক্ষেত্রে প্লাস্টিক যে সারা পৃথিবীতেই জ্বলন্ত সমস্যা, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। কিন্তু কম খরচে তার বিকল্প কী হবে বিশেষত সিঙ্গল ইউজের ক্ষেত্রে তা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্তেই পৌঁছতে পারেননি মোদী সরকার। কিন্তু বিকল্প হিসেবে চটের ব্যাগ গুরুত্ব পেলে, পশ্চিমবঙ্গের পাট শিল্প যে লাভবান হবে সেকথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ যে দেশের পাট চাষি এবং চট শিল্পকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
আর পাট শিল্পের এই অন্ধকার দিকই এবার লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসকে ডিভিডেন্ট দিতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বাংলার জুটমিলগুলিতে প্রায় ২.৫ লক্ষ শ্রমিক কাজ করেন, প্রায় ৪০ লক্ষ কৃষক কাঁচামাল অর্থাৎ পাট উৎপাদনের কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবেই রাজনৈতিক দলগুলি নির্বাচনের সময় তাঁদের পৌঁছবে সমর্থন চাইতে। বিশেষ করে পাট বেল্ট অর্থাৎ হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা এবং হাওড়া জেলায়।
২০১৯ সালে, বিজেপি ব্যারাকপুর এবং হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে জিতেছিল। এই এলাকাগুলিতে একাধিক জুটমিল রয়েছে। অন্যদিকে যে সব এলাকায় পাট চাষ হয় সেই সব এলাকাগুলিতে ভাল ফল করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস।
পাট চাষের জন্য পরিচিত মুর্শিদাবাদ জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ আবু তাহের খান দাবি করেছেন, রাজ্য সরকার পাট শিল্পের জন্য অনেক কিছু করছে। কাঁচামালের কম দামের বিষয়টি নিয়েও লড়াই করছে তাঁর দল। তিনি বলেন, “জানুয়ারি মাসে, তৃণমূল সরকার মিল শ্রমিকদের জন্য একটি নতুন মজুরি চুক্তি সম্পন্ন করেছে। তাতে তাদের প্রাপ্য সুবিধাগুলি কমপক্ষে ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজ্য সরকার শস্য বীমা প্রদান করছে, অন্যদিকে কেন্দ্র এই খাতটিকে অবহেলা করছে।”
উল্লেখ্য, বাংলার পাট বেল্টে ১৩০টি বিধানসভা আসন রয়েছে। ২০২১-এর নির্বাচনে তার মধ্যে মাত্র ৪৯টিতে জিততে পেরেছিল বিজেপি এবং বাকি সব আসছে জয়ী হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস।