বাবরি-গোধরা, সিলেবাস থেকে বাদ বিজেপি’র কলঙ্ক পর্ব
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বাবরি মসজিদ ধ্বংস, গুজরাত দাঙ্গার কলঙ্ক মুছে ফেলতে চাইছে বিজেপি! কারণ, কেন্দ্রীয় বোর্ডের পাঠ্যবইয়ে একাধিক জায়গা থেকে মুছে ফেলা হল বাবরি মসজিদ ধ্বংস, ২০০২-এর গুজরাত হিংসার প্রসঙ্গ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এনসিইআরটি-র ওয়েবসাইটে পাঠ্যসূচির এই পরিবর্তনের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। প্রসঙ্গত, গোটা দেশে কেন্দ্রীয় বোর্ড সিবিএসই অনুমোদিত প্রায় ৩০ হাজার স্কুলে এনসিইআরটি-র বই পাঠ্যপুস্তক হিসাবে পড়ানো হয়। জানা গিয়েছে, চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এই পরিবর্তিত পাঠ্যসূচি অনুসারে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের পড়ানো হবে।
একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায়টি ধর্মনিরপেক্ষতা সম্পর্কিত। তাতে গুজরাতের গোধরা দাঙ্গা নিয়ে এতদিন লেখা থাকত, ‘এক হাজারের বেশি মানুষ, প্রধানত মুসলমান ২০০২ সালে গোধরা পরবর্তী দাঙ্গায় নিহত হয়েছেন।’ নয়া পাঠ্যে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ‘মুসলমান’ শব্দটি। এ প্রসঙ্গে এনসিইআরটি-র যুক্তি, যে কোনও দাঙ্গায় দু’টি সম্প্রদায়ের মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হন। তাই ‘মুসলমান’ শব্দটি রাখার কোনও মানে হয় না। অনেকেই বলছেন, বাবরি মসজিদ ভাঙার পরবর্তী দাঙ্গা, প্রচুর হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মৃত্যু, ডন দাউদ ইব্রাহিমের মদতে মুম্বইয়ের ধারাবাহিক বিস্ফোরণ, মুম্বইয়ে আজমল কাসভদের জঙ্গি হামলা—সব কিছুই এতে গুলিয়ে যাবে। কারণ, বাবরি কিংবা গোধরা কাণ্ডকে জঙ্গি হামলার অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে থাকে পাকিস্তান তথা মৌলবাদীরা।
অযোধ্যায় মসজিদ ভাঙার পরবর্তীতে বিজেপির নতুন করে উত্থান এবং হিন্দুত্ব রাজনীতির মাথাচাড়া দেওয়ার ইতিহাসও ছিল রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বইতে। সেখানে ‘হিন্দুত্ব’ শব্দটি বাদ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের সংজ্ঞা, মণিপুরের ভারতে সংযুক্তির ইতিহাস বিজেপির মতো করে পাল্টে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। সমগ্র জম্মু ও কাশ্মীরকে ভারতের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে পাক অধিকৃত কাশ্মীর বা ‘পিওকে’-কে বলা হচ্ছে ‘পিওজেকে’, পাক অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীর। মণিপুরের মহারাজাকে ‘চাপ দিয়ে’ ভারতভুক্তির লাইনটিতে পরিবর্তন এনেছে এনসিইআরটি। লেখা হয়েছে, তাঁকে ‘বুঝিয়ে’ মণিপুরকে ভারতের সঙ্গে জোড়া হয়।