জগদীশচন্দ্র বসুনিয়াকে জিতিয়ে প্রতারক BJP-র গালে গণতান্ত্রিকভাবে চড় মারার ডাক অভিষেকের
ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির জনসভার মঞ্চে দাঁড়িয়ে দিল্লি থেকে বাংলার দাবি আদায়ের ডাক মমতারকোচবিহারের সিতাইয়ে দত্তপাড়া রোড থেকে বিডিও অফিস মোড় পর্যন্ত প্রার্থীকে সঙ্গে নিয়ে রোড শো করেন অভিষেক।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আজ কোচবিহারের তৃণমূল প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বসুনিয়ার সমর্থনে রোড শো করেন তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেকের রোড শো মানেই জনজোয়ার, একই ছবির দেখা মিলল কোচবিহারেও।
শনিবারের রোড শো ঘিরে মানুষের উৎসাহ, উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মতো। ভিড়ে রীতিমতো উপচে পড়েছিল রাস্তার দু-ধারে। রোড শো-তে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহ।
কোচবিহারের সিতাইয়ে দত্তপাড়া রোড থেকে বিডিও অফিস মোড় পর্যন্ত প্রার্থীকে সঙ্গে নিয়ে রোড শো করেন অভিষেক। রাস্তার দু’ধার থেকে সাধারণ মানুষের স্রোতের মত মিশতে থাকে। রোড শো শেষে বক্তব্য রাখেন অভিষেক। তিনি বলেন, “পাঁচ বছর বিজেপিকে দেখেলেন, এবার জগদীশচন্দ্র বসুনিয়াকে জিতিয়ে প্রতারক BJP গালে গণতান্ত্রিকভাবে চড় মারুন। একুশের বিধানসভাতেও মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছিল কিন্তু ওরা কোনও কাজই করেনি। একদিকে সৎ শিক্ষিত, ভদ্র, মার্জিত জগদীশচন্দ্র বসুনিয়া, অন্যদিকে বিজেপি এমন একজনকে প্রার্থী করেছে যাঁর নামে আদালত ছ’মাস আগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। আদালতে গিয়ে তাঁকে আত্মসমর্পণ করতে হয়েছিল! জামিন নিতে হয়েছিল। কাকে ভোট দেবেন সিদ্ধান্ত আপনাদের।”
এরপর রাজ্যের জনমুখী প্রকল্পের কথা তুলে ধরে অভিষেক জানান, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনাদের কন্যাশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, রূপশ্রী দিয়েছে। আর বিজেপি আপনাদের ভোট নিয়ে আপনাদের আবাসের টাকা, রাস্তার টাকা, একশো দিনের কাজের টাকা বন্ধ করেছে। এরা যদি আবার কোনওভাবে জেতে, আবার আপনাদের বঞ্চিত করবে। বাংলার টাকা তুলে নিয়ে গিয়ে উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশের হাতে তুলে দেবে। নিশীথ প্রামাণিকের দল এই কাজটাই করবে। কানে শুনে নয়, নিজের অধিকার সামনে রেখে চোখে দেখে ভোট দিন।”
বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে বলেন, “বিজেপিকে জিতিয়ে দিনহাটা, সিতাই, শীতলকুচির মানুষ কী পেয়েছেন? বিএসএফের চোখ রাঙানি আর একের পর এক গুলি! রাজবংশী যুবক প্রেম কুমার বর্মনকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল বিএসএফ। এই বিএসএফ কে নিয়ন্ত্রণ করেন? নিশীথ প্রামানিক স্বরাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী। একবার কোনও প্রতিবাদ করেছে বা অভিযোগ জানিয়েছে, যে এইভাবে একজনকে মারা হল? পাঁচ বছর ধরে সাংসদ, তারপর মন্ত্রী আমায় দেখান কোচবিহারের উন্নয়নের জন্য সে কেন্দ্র থেকে কোনও টাকা নিয়ে এসেছে।”
সিতাইয়ে জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়ার সমর্থনে জনসভা থেকেই পাচার থেকে অনুপ্রবেশ, সমস্ত ইস্যুতেই কেন্দ্রকে নিশানা করলেন অভিষেক। দাবি করলেন, নিশীথ কোনওদিনও আমজনতার কথা ভাবেননি। তাঁদের জন্য কিছু করেননি। তিনি বলেন, “বিজেপি বলেছিল আচ্ছে দিন আসবে। কার এসেছে আচ্ছে দিন? নিশীথ প্রামানিকের আচ্ছে দিন এসেছে। নরেন্দ্র মোদীর এসেছে। অমিত শাহের এসেছে।” একুশের বিধানসভা নির্বাচনে শীতলকুচির ভোটকেন্দ্রে পাঁচজনের হত্যা প্রশ্নেও নিশীথের বিরুদ্ধে সরব হন অভিষেক।
তৃণমূলকে জেতালে ডিসেম্বরের মধ্যেই মিলবে আবাসের বাড়ি, কোচবিহারের সিতাইয়ের প্রচার সভা থেকে এমনই প্রতিশ্রুতি দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন অভিষেক বললেন, আর আবাসের জন্য কারও অপেক্ষা করতে হবে না। আসন্ন নির্বাচনে কোচবিহারে জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়াকে জেতালে ডিসেম্বরের মধ্যে এলাকার বাসিন্দাদের আবাসের ঘর মেলার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।