চীনের নজরে আন্দামান-লাক্ষাদ্বীপ, সতর্ক ভারত
ভারত মহাসাগরে আধিপত্য বাড়াতে উঠেপড়ে লেগেছে চীন। মায়ানমার, পাকিস্তান ও ইরানের বন্দরগুলির মধ্য দিয়ে চীনা নৌবাহিনী ভারত মহাসাগরে শক্তি বাড়াতে অবস্থান নিয়েছে। ফলে তৎপরতা বাড়িয়েছে ভারতও। আন্দামান ও নিকোবর, লাক্ষাদ্বীপ সহ অন্যান্য দ্বীপ অঞ্চলগুলিতে দ্রুত সামরিক ও অসামরিক পরিকাঠামোগত উন্নয়নে জোর দেওয়া হচ্ছে, যাতে প্রয়োজনে নৌপরিবহণে কোনও বাধা সৃষ্টি না হয়। দক্ষিণ চীন সাগরের মতো সমস্যা ভারত মহাসাগরের ওই এলাকাতে যাতে না হয়, সেদিকে নজর রয়েছে দিল্লির।
দীর্ঘ ৭০ বছর পর শুরু হয়েছে থাই ক্যানাল বা ক্রা খালের কাজ। এই কাজে ব্যাংককের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে চীন। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য, থাইল্যান্ড উপসাগরকে আন্দামান সাগরের সঙ্গে সংযুক্ত করা। এই প্রকল্প সম্পূর্ণ হলে সবচেয়ে বেশি সুবিধা হবে চীনের। কোনওরকম বাধা ছাড়াই জাহাজগুলি মালাক্কা প্রণালীতে এসে পড়বে। ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্য দিয়ে যাতায়াতের সময় ও দূরত্ব দুই-ই বাঁচবে।
লাদাখ সীমান্তে শান্তি ফেরার আগেই সমুদ্র এলাকায় চীনের এই তৎপরতা ভাবিয়ে তুলেছে ভারতকে। ঝুঁকি না নিয়ে আন্দামান ও নিকোবর এবং লাক্ষাদ্বীপের নিরাপত্তা পরিকাঠামো বাড়াতে নেমে পড়েছে ভারত। জানা গিয়েছে, মায়ানমার, পাকিস্তান ও ইরানের সঙ্গে চিন হাত মেলানোয় সতর্ক করা হয়েছে ভারতীয় দ্বীপগুলিকে। উত্তর আন্দামান সাগরে শিবপুরের আইএনএস কোহসায় ও নিকোবরের ক্যাম্পবেল স্ট্রিপে বিমানবাহিনীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সামরিক তৎপরতা শুরু হয়েছে লাক্ষাদ্বীপে।
এছাড়া বঙ্গোপসাগর, মালাক্কা স্ট্রেট ও আরব সাগর পর্যন্ত গোটা এলাকায় সর্বস্তরের সেনাবাহিনীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আন্দামান ও নিকোবর এবং লাক্ষাদ্বীপের অবস্থান বিশ্বের ব্যস্ততম জলপথ এলাকায়। সেই জন্যই এখানে নিরাপত্তা ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সতর্ক করা হয়েছে নৌ ও বায়ুসেনাকে। মায়ানমারের দিকেও চীন শক্তি বাড়াচ্ছে। ফলে সেখানেও একাধিক যুদ্ধজাহাজ মজুত রাখতে হয়েছে। আন্দামান ও নিকোবর এলাকায় নিযুক্ত এক ট্রাই সার্ভিস কমান্ডার জানিয়েছেন, দ্বীপপুঞ্জের দুটি অঞ্চলকেই ভারতীয় যুদ্ধজাহাজের ঘাঁটি হিসাবে গড়ে তোলা হচ্ছে। মূল ভূখণ্ড থেকে অনেক দূরে এই অঞ্চলে নৌবাহিনীর পৌঁছোতে যাতে অসুবিধা না হয়, সেদিকেও নজর রাখা হবে।