পথে পথে গান গেয়ে শান্তিপূর্ণ ভোটের আবেদন পূর্ব বর্ধমানের স্বপন বাউলের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: একতারা আর তবলা গোছের বাদ্যযন্ত্র নিয়ে জলপাইগুড়ি, কখনও দার্জিলিং আবার মালদহের পথে পথে গান গেয়ে শান্তিপূর্ণ ও অবাধ ভোটের আবেদন জানাচ্ছেন পূর্ব বর্ধমানের বাসিন্দা প্রৌঢ় স্বপন বাউল। গেরুয়া বসন, মাথায় গেরুয়া পাগড়ি আর গান গেয়ে চলেছেন স্বপন। রাজনৈতিক দলের কর্মী থেকে সাধারণ ভোটার, সবার কাছে তাঁর আবেদন নির্বাচনী হানাহানি থেকে বিরত থাকুন। গানের মাধ্যমে তাঁর আবেদন, শুনতে শুনতে অনেকেই একটু জিরিয়ে নিচ্ছেন।
৫৮ বছরের স্বপন পূর্ব বর্ধমানের খাজা আনোয়ার বেড় এলাকার বাসিন্দা। লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পরদিনই বাড়ি থেকে বেরিয়েছেন। বৃদ্ধা মা-সহ স্বপন বাউলের পরিবারে রয়েছেন আট সদস্য। নিয়মিত রোজগার কার্যত নেই বললেই চলে। গান শিখিয়ে, গান শুনিয়ে সামান্য যা উপার্জন হয়, তাতেই দিন-গুজরান হয়। তিনি গেয়ে চলেছেন, ‘মায়ের কোল শূন্য যেন কেউ কোরো না…জাত পাত, ধর্মের ভেদাভেদে গোষ্ঠীর প্রলোভনে কেউ পড়ো না।’
স্বপনের কথায়, ভোট হল উৎসব। মানুষ নির্ভয়ে ভোট দেবে। নিজের ভোট নিজে দেবে। রাজনৈতিক দলের কর্মী, সমর্থকরা যেন একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা, সৌজন্য ও বিনয় বজায় রাখেন, এমনটাই চাইছেন তিনি। তাঁর আর্তি, কোনও মায়ের কোল যেন অকালে খালি না হয়ে। বাসভাড়া, বাঁচাতে তিনি চেপে বসেন বাই সাইকেলে। ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় তাঁর গানের প্রশংসা করেছিলেন। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তর থেকে মিলেছিল শংসাপত্র।
শিলিগুড়ি থেকে মালদহে এসে রাত রেলের ওয়েটিং রুমে থাকার আবেদন করেছিলেন। কিন্তু প্রত্যাখ্যাত হয়ে গাছতলায় রাত কাটান। তবুও হাল ছাড়ছেন না। গণতন্ত্রের জন্য তিনি গেয়েই যাবেন। বুধবার রাতে বর্ধমান ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার থেকে আবার বেরিয়ে পড়েছেন। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বসিরহাট, ভাঙর গানে গানে বার্তা দিতে যাবেন সর্বত্র।