আগে থেকেই পরিকল্পনা – রাজ্যের সেচ ব্যবস্থায় তীব্র গরমের সেচের জল নিশ্চিত বোরো চাষিদের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: রাজ্যে চলে তাপপ্রবাহ, রেকর্ড তাপমাত্রা সব নজির ভাঙছে — এরই মধ্যে বোরো চাষের জন্য পর্যাপ্ত সেচের জল নিশ্চিত করল রাজ্য। শুধু তাই নয়, অতিরিক্ত ১২ হাজার একরেরও বেশি জমিতে চাষের জন্য পর্যাপ্ত জল সরবারহ হয়েছে। আগে খবর হত, খালে জল নেই, তাই বোরো চাষ নিয়ে বিপাকে কৃষকরা। তবে এবার পরিস্থিতি আলাদা।
বছরের শুরুতেই কৃষিকাজের জন্য প্রয়োজনীয় সেচের জল নিয়ে বাৎসরিক পরিকল্পনা সেরে রাখে রাজ্য। তবে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা মাঝেমধ্যে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সেক্ষেত্রে বার্ষিক পরিকল্পনা থাকা সত্ত্বেও অতিরিক্ত উদ্যোগ নিতে হয় রাজ্যকে। গত দু’সপ্তাহ ধরে তীব্র দাবদাহ ও শুষ্ক আবহাওয়া চলছে রাজ্যে। ফলে চাষের জন্য পর্যাপ্ত জল সরবরাহের ক্ষেত্রে সংশয় তৈরি হয় প্রশাসনিক কর্তাদের মধ্যে। তড়িঘড়ি পরিস্থিতির পুনর্মূল্যায়ন করে রিপোর্ট তৈরি হয়। সেই রিপোর্টেই উঠে এসেছে, তীব্র দাবদাহ সত্ত্বেও কৃষিকাজের জন্য পরিকল্পনা অনুযায়ী ১০০ শতাংশ সেচের জল নিশ্চিত করা গিয়েছে।
ময়ূরাক্ষী ও কংসাবতী নদীকে ভিত্তি করে যে সেচ ব্যবস্থা, তাতে বার্ষিক পরিকল্পনার টার্গেটে পৌঁছনো সম্ভব হয়েছে। ময়ূরাক্ষী সেচ ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত বোরো চাষের জন্য সেচের জল পৌঁছেছে ১৮ হাজার ৫৯০ একর জমিতে। কংসাবতীর ক্ষেত্রে সেচের জল পৌঁছেছে ৩৬ হাজার একর জমিতে। যার ফলে খরাপ্রবণ বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং হুগলির দু’টি ব্লকে কৃষকরা ব্যাপকভাবে উপকৃত হয়েছেন।
দামোদর নদকে কেন্দ্র করে যে সেচ ব্যবস্থা, সম্প্রতি তার আমূল সংস্কার করেছে রাজ্য। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল মেজর ইরিগেশন অ্যান্ড ফ্লাড ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্টের’ মাধ্যমে অতিরিক্ত কৃষিজমিতে সেচের জল সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রায় ১,২০০ কোটি টাকা খরচে পুরনো দামোদর প্রধান খাল সহ ২,৩৫৪টি খাল সংস্কার, ১,৭৫০টি সেচ পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং ৪,৪০৩টি ‘আউটলেট গেট’ নির্মাণের কাজ হয়েছে। এর ফলে উত্তর বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, হাওড়া সহ পাঁচ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় চাষের জন্য পর্যাপ্ত জল সরবরাহ করা গিয়েছে। বার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী দামোদর সেচ ব্যবস্থার উপর নির্ভর করে ৫০ হাজার একর জমিতে জল সরবরাহ নিশ্চিত করার কথা ছিল। খাল সংস্কারের জেরে এবার জল সরবরাহ হয়েছে ৬২ হাজার ২৪২ একর জমিতে। সেচ ও ক্ষুদ্র সেচদপ্তর এই পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ চালিয়েছে।