JEE ও NEET পরীক্ষা পিছোনোর দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন করার সিদ্ধান্ত মমতা-সহ ৭ CM-র
একাধিকবার কেন্দ্রকে আর্জি জানিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দাখিলেরও অনুরোধ করেছেন। এবার মেডিক্যালের সর্বভারতীয় অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা (নিট) এবং সর্বভারতীয় জয়েন্ট পরীক্ষার (জেইই মেন) স্থগিত রাখার আর্জি জানিয়ে সব অবিজেপি রাজ্যকে একযোগ সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার প্রস্তাব দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে নিট ও জেইই পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার দাবিতে বুধবার অবিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি সোনিয়া গান্ধী। তাঁদের উদ্যোগেই এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে।
কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী ও বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহ্বানে বুধবার ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দেন সাত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা ছাড়াও জল্পনায় জল ঢেলে বৈঠকে উপস্থিত হন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে এবং ঝাড়খণ্ডের হেমন্ত সোরেন। হেমন্তের বাবা-মা’র শারীরিক অবস্থা নিয়ে খোঁজ নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন হেমন্ত সোরেন বলেন, ‘পরীক্ষা হলে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সম্ভবনা রয়েছে। স্কুল কলেজ খুলতে হবে। পরীক্ষার্থীর সঙ্গে অভিভাবকেরাও যাবেন।’ এ ছাড়াও এ দিনের বৈঠকে ছিলেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট, ছত্তিসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল ও পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামী।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই প্রথম কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিরোধীদের একজোট হয়ে সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, ‘দেশের পরিস্থিতি ভালো নয়। ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। কীভাবে নিট ও জয়েন্ট এন্ট্রান্স (মেন) পরীক্ষা দেবে ছাত্রছাত্রীরা। রেল চলছে না। পরিবহণ স্বাভাবিক নয়। পরীক্ষার্থীরা মানসিক চাপের মুখে। অনেকে হতাশায় ভুগছে। এখন পরীক্ষার জন্য তারা প্রস্তুত নয়। প্রধানমন্ত্রীর হাতে বিকল্প ছিল। পরীক্ষা স্থগিত রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি দু বার। সব মুখ্যমন্ত্রীদের এগিয়ে আসার আবেদন করছি। আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করা যেতে পারে। আমরা একসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারি।’
যদিও শিক্ষা মন্ত্রকের শীর্ষ একটি সূত্রের দাবি, নিট ও জেইই-র আয়োজন নিয়ে পুনর্বিবেচনার পথে যাবে না কেন্দ্রীয় সরকার। শিক্ষামন্ত্রকের দাবি, ছাত্রছাত্রীরাই পরীক্ষা দিতে চাইছেন।
কেন্দ্রের নির্দেশিকা অনুযায়ী, ১ থেকে ৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে JEE-Main পরীক্ষা হবে। ২৭ সেপ্টেম্বর নেওয়া হবে IIT-তে ভর্তির জন্য JEE-Advanced-এর পরীক্ষা। এবং ১৩ সেপ্টেম্বর নেওয়া হবে NEET পরীক্ষা। তবে করোনাকালে পরীক্ষার আয়োজন না করা নিয়ে আওয়াজ উঠেছে দেশজুড়েই। এরই মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড। NTA বুধবার নিজেদের ওয়েবসাইটে হল টিকিট প্রকাশ করেছে, যেখানে পরীক্ষার্থীদের রোল নম্বর ও সেন্টারের নামে লেখা আছে।
এ দিকে, সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানাতে বৃহস্পতিবার থেকে প্রতিবাদ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পরীক্ষার্থীরা। বাড়ি থেকেই কালো পতাকা দেখিয়ে, হাতে ও কপালে কালো ব্যান্ড বেঁধে, কালো মাস্ক পরে চলবে ক্ষোভপ্রদর্শন। যদিও কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর যুক্তি ছিল, ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকরা চেয়েছিলেন বলেই পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে।