মুখ্যমন্ত্রী জেলে, তাঁদেরই নিরাপত্তা নেই, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা থাকবে কীভাবে? বিস্ফোরক নির্মলা সিতারমণের স্বামী
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মোদী সরকারের সমালোচনা করলেন নির্মলা সিতারমণের স্বামী। বৃহস্পতিবার কলকাতায় এসে অর্থনীতিবিদ পরাকালা প্রভাকরণ তথা নির্মলা সিতারমণের (Nirmala Sitharaman) স্বামী বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। তিনি বলেন ‘বর্তমান সময়ে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলি হুমকির মুখে। একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে জেলে থাকতে হচ্ছে। তাঁদেরই নিরাপত্তা নেই। তাহলে আমার মতো সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা থাকবে কীভাবে !’
মোদী আমলে নিরাপত্তাহীনতা
এদিন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর স্বামীর লেখা বই ‘দ্য ক্রুকড টিম্বার অফ দ্য নিউ ইন্ডিয়া’র আনুষ্ঠানিক প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, ওম প্রকাশ মিশ্র, তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার, বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে তিনি জানান, এই বই লিখতে গিয়ে নানা ধরনের হুমকির সম্মুখীন হতে হয়েছে তাঁকে। সোশ্যাল মিডিয়ার হুমকির পাশাপাশি সামনা সামনি তাঁকে বলা হয়েছে এই বই না লিখতে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি এই প্রসঙ্গে স্পষ্ট জানিয়েছেন, “কয়েকদিন আগেই লোকসভার অধিবেশনে আপনারা দেখেছেন ১৩৭ জন এমপিকে সাসপেন্ড করে দিয়ে বিল পাস করা হয়েছে। এই অবস্থায় রাজ্য সরকারগুলোর কোনও বক্তব্য থাকলে তা তুলে ধরার জায়গা থাকে না।”
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা
এছাড়া নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন প্রভাকরণ। তিনি বলেছেন, ভোট চলাকালীন নির্বাচন কমিশনের কাজ নিয়ে সন্দেহের অবকাশ থাকছে। কারণ এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশনের নিয়োগই সন্দেহের মুখে দাঁড়িয়ে। সুপ্রিম কোর্টকে এই নিয়োগের বাইরে রাখা হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেই কেন্দ্রীয় সরকার কমিশনার নিয়োগ করতে পারে। এই মুহূর্তে প্রত্যেকটা সংস্থাই সংকটের সম্মুখীন।
রাজনীতির অস্ত্র হিসেবে ধর্মের ব্যবহার
নির্বাচনী ময়দানে ধর্মের ব্যবহার নিয়ে পরাকলা প্রভাকরণ বলেছেন, তাঁর জীবনে অতীতে ধর্ম ছিল না এমন নয়। অতীতেও ধর্ম ছিল। কিন্তু বর্তমানে পার্থক্য এটাই হয়ে গিয়েছে যে ধর্মকে সামাজিক পরিসরে নিয়ে আসা হচ্ছে। রাজনীতির অস্ত্র হিসেবে ধর্মের ব্যবহার হচ্ছে। এমনটা করার পেছনে সরকারের ভূমিকা রয়েছে। আর এটা কোনওভাবেই সংবিধান সমর্থন করে না। সংবিধান সবসময় বৈচিত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে।ভারতে কোনও একটি ধর্ম কোন বা একটি রাজনৈতিক দল এমনকী কোনও একটি বিশেষ অঞ্চলের প্রতিনিধিত্বও করে না। ভারতের সংবিধান সকলকে নিয়ে চলার কথা বলে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় আজকে দেশের নাগরিকত্বও ধর্ম দ্বারা নির্ধারিত করার চেষ্টা হচ্ছে।